মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনায় এ বার এনআইএ তদন্ত চেয়ে জোড়া মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। আবার হিংসায় আক্রান্তেরা বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। দু’টি মামলার শুনানি আগামিকাল হওয়ার সম্ভাবনা।?
ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ বাতিলের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার একাধিক এলাকা। ঝড়েছে রক্ত। তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এখনও অনেকে নিজের বাড়ি ছেড়ে নদীর ওপারে মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগরের একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। একাধিক ভাঙচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ময়দানে নামেছে বিএসএফ এবং সিআরপিএফ। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এলাকায় রয়েছে আধাসেনাও। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম। এখনও পর্যন্ত ২২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।?
মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবিতে এ দিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপি নেত্রী তথা আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল এবং আইনজীবী সংযুক্তা সামন্ত। এনআইএ তদন্তের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতি চান তাঁরা। তাঁদের আরও বক্তব্য, মুর্শিদাবাদে ৩০০ পরিবার ঘরছাড়া। তাদের যাতে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থার করা হয়, তারও আবেদন জানানো হয়ছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন। আগামিকাল এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।?
আজ, বুধবার মুরর্শিদাবাদে একাধিক আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা করেছেন এদিন। সুতি, ধুলিয়ান, সামসেরগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা মামলা করেছেন। মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় এনআইএ তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। জেলা পুলিশের সুপারকে ইমেল করেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আগামিকাল এই মামলারও শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।?
আরও একটি মামলা দায়ের করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্রীয় আহ্বক অমিয় সরকার বলেন, “যারা দোষী তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করা হোক। এটা এনআইএ তদন্ত করুক। এর নেপথ্যে কোন মৌলবাদী সংগঠনের ভূমিকা রয়েছে, তা বেরিয়ে আসুক। এটা রাষ্ট্রের সুরক্ষার বিষয়। এটা শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক অশান্তি নয়। এটা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দ্বারাই সম্ভব।” এ ছাড়াও দোষীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করা হোক বলে দাবি করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।?
এ দিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্রীয় আহ্বাক অমিয় দাসের আইনজীবী আনিন্দ সুন্দর দাস বলেন, “মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়ে আমরা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে একটি আবেদন করেছি। ঘটনার তদন্ত এনআইএকে দিয়ে করানো হোক। সঙ্গে সিবিআইকেও রাখা হোক। যাঁদের ঘর লুঠ হয়েছে, ঘরছাড়া হয়েছে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হোক। প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে যাতে তাঁদের ঘরে ফিরিয়ে আনে তার ব্যবস্থা করার আবেদন জানানো হয়েছে।”?
Share
