Job Scam

জীবন-সঙ্কট! দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরে ফের ইডির হাতে গ্রেফতার জীবনকৃষ্ণ সাহা, মুর্শিদাবাদ থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে কলকাতায়

সিবিআইয়ের পর ইডির মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তাঁকে আজ আদালতে হাজির করানো হবে।

তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার।
নিজস্ব সংবাদদাতা, বড়ঞা
  • শেষ আপডেট:২৫ আগস্ট ২০২৫ ০৪:১২

সকাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেছেন না। তাঁর কথায় রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি। এ বার তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তাঁকে আজই আদালতে পেশ করা হবে।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সকাল থেকে কলকাতা-সহ চার যায়গায় চলছে ইডির তল্লাশি অভিযান। তাঁদের একটি দল যায় মুর্শিদাবাদের আন্দি গ্রামে। সেখানেই তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি। ইডি সুত্রের খবর, সকালে ইডি আধিকারিকেরা সেখানে গেলে তাঁদের দেখতেই পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান। এর পরে পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেন। জীবনকৃষ্ণকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। নিয়ে আসা হয় বাড়ির ভিতরে। সেখানেই চলে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ।

পাশাপাশি এ দিন জীবনকৃষ্ণ নিজের দু’টি মোবাইল ফোন ফের পুকুরের দিকে ছুড়ে ফেলার চেষ্টা করছিলেন। প্রথমে আধিকারিকেরা বুঝতে পারেননি। পরে খোঁজাখুঁজির পরে পুকুরের পাশে নর্দমা থেকে উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, সেই মোবাইলের পাসওয়ার্ড জানতে চাইলে তিনি তদন্তকারীদের তা দিতে চাননি। ইডি সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা জীবনকৃষ্ণ সাহা বেশ কয়েকটি একাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করেছেন। সে সমস্ত একাউন্ট পরিবারের সদস্যদের বলে দাবি।

এ ছাড়াও, ৯০ দিনের কল রেকর্ড সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেক্ষেত্রেও তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে বলে খবর। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন জানানো হতে পারে। আজ, সোমবার ধৃতকে ইডির বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে।

জীবনকৃষ্ণ সাহার পাশাপাশি সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চলছে। মায়া সাহা জীবনকৃষ্ণের সম্পর্কে পিসি হন। তদন্তকারীদের দল রঘুনাথগঞ্জে জীবনকৃষ্ণের শশুরবাড়িতেও গিয়েছে। এ ছাড়াও মহীষগ্রামে রাজেশ সাহা নামে এক জনের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলছে।

এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২৩ সালে ১৭ এপ্রিল জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করে ইডি। তার আগে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেই বারও জীবনকৃষ্ণ মোবাইল ফোন পুকুরের জলে ফেলে দেন। ডুবুরি নামিয়ে না মোবাইল না মেলায় পুকুরের ছেঁচে তা উদ্ধার করা হয়। প্রায় তিন পর তা পাওয়া যায়। ১৩ মাস জেলে কাটিয়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন নেন তিনি। এ বারও তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা সেই একই কাজ করলেন।

জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি বাদ দিয়ে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়ের শশুরবাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলছে। পুরুলিয়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি। প্রসন্ন রায় এই দুর্নীতিতে ‘মিডল‍ম‍্যান’ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। তিনি এখন জেলে রয়েছেন। তাঁর সম্পত্তি আগেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রসন্ন রায়ের শশুরবাড়ির তিন বোন একসাথে প্রাথমিকে শিক্ষকের চাকরি পান বলে অভিযোগ। সেই সুত্রে সেখানে ইডি তল্লাশি চালাচ্ছে কি না তা স্পষ্ট নয়।


Share