Howrah Unnatural Death Case

হাওড়ার জগাছায় একই পরিবারের বাবা-মা-পুত্রের রহস‍্যমৃত‍্যু, তদন্তে পুলিশ

হাওড়ার জগাছার হাটপুকুর এলাকায় একটি ফ্ল্যাট থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যের দেহ উদ্ধার হয়েছে। জানা গিয়েছে, তারা সম্পর্কে বাবা, মা এবং ছেলে।

জগাছার হাটপুকুরের একটি ফ্ল্যাটে ঘটনাটি ঘটেছে।
এখন কলকাতা ডেস্ক, জগাছা
  • শেষ আপডেট:০১ জুলাই ২০২৫ ০৮:১৫

মঙ্গলবার হাওড়ার একই পরিবারের তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হল।  জগাছা থানা এলাকার হাটপুকুরের ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন। সূত্রে খবর, বাবা, মা ও ছেলে বিষাক্ত কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃতদের নাম বলরাম খাঁ (৬৬), শেলি খাঁ (৫৪) ও সমব্রিত খাঁ(৩২)। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

আজ, মঙ্গলবার সকালে শেলির বোন স্বাতী মিত্র দিদির ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। কিন্তু দরজার এ পারে দাঁড়িয়ে অনেক ডাকাডাকি করেও স্বাতী কারও সাড়াশব্দ পাননি। জানা গিয়েছে, ফ্ল্যাটের দরজাটি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। এর পরেই স্বাতী পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে জগাছা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে তারা। তার পরেই দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রী একটি ঘরে এবং পাশের ঘরে বিছানায় ছেলের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়েছে। যা দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিষাক্ত কিছু খেয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। পুলিশ মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

জানা গিয়েছে, বলরাম খাঁ জীবনবিমার কাজ করতেন। বলরামের স্ত্রী শেলি খাঁ পোস্ট অফিসে রেকারিং ডিপোজিট, টাকা জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করতেন। ছেলে সমব্রিত খাঁ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির কর্মী ছিলেন। তারা কয়েক বছর আগেই হাটপুকুরের শিবালয় অ্যাপার্টমেন্টে আসেন বলে জানা গিয়েছে।

এ দিন স্বাতী জানান, দিদি এবং জামাইবাবুর সঙ্গে প্রায় রোজই কথা হত তাঁর। কিন্তু সোমবার রাতে কয়েক বার ফোন করে না পাওয়ায় সকালে দিদির সঙ্গে দেখা করতে ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এই রকম দৃশ্য যে অপেক্ষা করছ, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি।’’ মহিলার দাবি, দিদির সংসারে কোনও অশান্তির কথা তাঁর জানা নেই। জামাইবাবু বলরাম ছিলেন জীবনবিমার এজেন্ট। দিদি পোস্ট অফিসে চাকরি করতেন। বোনপো অনলাইনে কাজ ব্যবসা করতেন।

মঙ্গলবার প্রতিবেশী ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ছেলে বাড়িতে থেকেই কাজ করত। খুবই শান্ত ছিল। কারও সঙ্গেই খুব একটা বেশি কথাবার্তা বলত না। এমনকি আমাদের কোনও গেট টুগেদার থাকলেও ছেলে আসতেন না। তবে দাদা (বলরাম), বৌদি (শেলি) সব সময়ে আসতেন। আমরা সকলে খুবই ফ্যামিলিয়ার ছিলেন। তাঁরা কখনও কোনও সমস্যার কথা কিন্তু বলেননি। তবে দেখে মনে হতো নির্ঝঞ্ঝাট পরিবার।’

পুলিশ সূত্রে খবর, সকালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। একটি লোন সংক্রান্ত বিষয়ে কথাবার্তা হয়। কত টাকার ঋণ ছিল, তা খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। অন্য কোথাও দম্পতি বা তাঁদের পুত্রের ঋণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আর্থিক কোনও সমস্যার কারণে এই পদক্ষেপ নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে, তদন্ত শুরু করেছে জগাছা থানার পুলিশ।


Share