Nadia Heritage

লন্ডনের ছোঁয়া নদিয়ায়, প্রত্যন্ত গ্রামেই রয়েছে ‘ভিক্টোরিয়া’! শতাব্দী প্রাচীন আবাসনকে ঘিরে ভিড় পর্যটকদের

নদিয়ার কৃষ্ণনগরের চর শম্ভুনগর গ্রামে রয়েছে ওই আবাসন। সেটি শতাব্দী প্রাচীন বলেই জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা।


গোবর্ধন আগরওয়ালের সেই বাড়ি।
বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায়
কৃষ্ণনগর -নিজস্ব চিত্র।
  • শেষ আপডেট:১১ মে ২০২৫ ১২:০০

প্রত্যন্ত গ্রামের আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার মত এক অনন্য চিত্র এখনো যেন জ্বলজ্বল করছে। সৌন্দর্যময় পরিবেশ। রয়েছে রানী ‘ভিক্টোরিয়া’-র ছোঁয়া। লন্ডনের বিলাস বহুল আবাসনের মতো হুবহু একই আবাসন দাঁড়িয়ে রয়েছে খোলা আকাশের নিচে। আবাসনের ইটের গায়ে লাল রংয়ের ছোঁয়া রয়েছে। কাঠের দরজার নকশা বলে দিচ্ছে ‘আমি দাঁড়িয়ে আছি শতাধিক বছর ধরে’। এমনই এক প্রাচীন ঐতিহ্যের আবাসনের সন্ধান মিললো নদিয়ার কৃষ্ণনগরের চর শম্ভুনগর গ্রামে।? 

জানা গিয়েছে, কয়েক যুগ আগে ওই গ্রামে বসবাস করতেন প্রায় ২০০টি পরিবার। তখন চলছিল ব্রিটিশদের রাজত্ব। সেই সময় গোবর্ধন আগরওয়াল নামে এক জমিদার এই আবাসনটি তৈরি করেছিলেন। গ্রামের প্রবীনদের বলছেন, তারা বাবা-ঠাকুরদাদের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছিলেন এই আবাসনে যাতায়াত করতেন ব্রিটিশরা। সময়ের পরিবর্তনে জমিদারি ধ্বংসের পথে চলে যায়। সেই আঁচ পাওয়া যায় গোবর্ধন আগরওয়ালের এই আবাসনেও।? 

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, বাধ্য হয়েই আবাসনটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন তাঁরা। পরবর্তীতে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে সরকারি আধিকারিকরাও এই আবাসনে যাতায়াত করতেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও বর্তমানে বিলাসবহুল এই আবাসনটির ভগ্নদশা চোখে পড়লেও এখনও পর্যটকদের কাছে অন্যতম পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, শুধু নদিয়া জেলা নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে এই প্রাচীন জমিদারি আবাসন দেখা মেলা ভার।? 

প্রত্যন্ত গ্রামের আঁকাবাঁকা পথের চারপাশে রয়েছে খেজুর গাছ, তালগাছ-সহ প্রকৃতির অনন্য সুন্দর্যতা। পাশেই বয়ে যাচ্ছে কৃষ্ণনগরের জলঙ্গি নদী। পথ পেরিয়ে আবাসনে ঢুকলেই দেখা যাবে তার দু’পাশে রয়েছে রানী রাসমনির আবক্ষ মূর্তি। যেখানে লেখা রয়েছে ‘ভিক্টোরিয়া দা গুড’। আর এটাই প্রমাণ করে দেয় ‘ভিক্টোরিয়া’-র আদতের ছোঁয়া রয়েছে এই ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন আবাসনে। রংবেরঙের পাখিদের ডাক, ফুলের অরণ্য, আরো কত কি অপূর্ব সুন্দর পরিবেশের মধ্যেই খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে রয়েছে অতি প্রাচীন এই বাংলো। তবে লোকমুখে শোনা যায়, বাড়িটি বর্তমানে ‘কোম্পানির বাড়ি’ নামেই পরিচিত। তবে কী কারনে এই নাম, তা অজানা গ্রামবাসীদের কাছে। বর্তমানে চড় শম্ভুনগর গ্রামে হাজার হাজার পরিবারের বসবাস রয়েছে। কিন্তু এখনও প্রাচীন ঐতিহ্যের ছোঁয়া রয়েছে এই প্রাচীন আবাসনটিকে ঘিরে। প্রতিদিন লেগে থাকে পর্যটকদের আনাগোনা। এক প্রকার বলা যেতেই পারে, প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে এই আবাসন আরও যেন মুগ্ধময়। ঠিক তেমনি গ্রাম বাংলার ‘ভিক্টোরিয়া’ এবং সুদূর লন্ডনের আবাসনগুলির মত কারুকার্য তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেন পর্যটকরা।? 


Share    

হাইলাইটস