Harassing College Principal

পরিবেশ সচেতনতার প্রচার করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতার হাতে নিগৃহীত কলেজ অধ্যক্ষ

কলেজ অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। তাঁর দাবি, ঘটনার সময় ‘মানসিক অবস্থা’ ভাল ছিল না। সেখানে যদি তাঁর নিজের বাবাও থাকত, তাকেও মারত। তিনি তখন খুব রেগে গিয়েছিলেন। তিনি নিজের ‘অন্যায়’ স্বীকার করে নিয়েছেন। যদিও পুলিশ তাঁকে রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করেনি।

অপমানের জেরে চোখের জল ফেলছেন অধ্যক্ষ।
নিজস্ব সংবাদদাতা: কৃষ্ণনগর
  • শেষ আপডেট:০৩ জুলাই ২০২৫ ১১:৫৮

পরিবেশ সচেতনতার প্রচার করতে গিয়ে তৃণমূল নেতার হাতে হেনস্থার শিকার হলেন কলেজের অধ্যক্ষ!

নদিয়ার চাপড়ায় নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটেছে। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যের ভাই স্থানীয় তৃণমূল নেতা অজয় ঘোষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ওই অধ্যক্ষ। তৃণমূল নেতার হাত থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দার ওই অধ‍্যক্ষকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন চাপড়া জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে। বাস্তুতান্ত্রিকভারসাম্য নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি।

এই কাজ করতে গিয়েই শুভাশিস দেখেন, চাপড়া থানা এলাকায় রাজ্য সড়কের পাশে একাধিক নয়ানজুলি আর ঝোপঝাড় উধাও হয়ে গিয়েছে। নয়ানজুলি ভরাট করে দোকান তৈরি হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার সচেতনতা বাড়াতেই সেখানে বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছিলেন শুভাশিস। কিন্তু সম্প্রতি তিনি দেখেন, কেউ সেই বোর্ড ভেঙে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সেগুলিই মেরামত করতে গিয়েছিলেন তিনি।

সেই সময়েই তৃণমূল নেতা অজয় তাঁকে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ শুভাশিসের। রাস্তায় প্রকাশ্যে নিগ্রহ করেছেন বলে অভিযোগ তাঁর। এই ঘটনায় অপমানিত হয়ে কেঁদেই ফেলেন অধ্যক্ষ। তিনি অন্য জায়গায় বদলি হওয়ার চেষ্টা করবেন বলেও জানান। যদি তা সম্ভব না হয়, চাকরিই ছেড়ে দেবেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শুভাশিস।

পরে তিনি বলেন, ‘‘ডিপার্টমেন্টকে বলব, যে কোনও জায়গায় আমাকে ট্রান্সফার করেদিন। আমি ট্রান্সফার নিয়ে নেব। যদি তা-ও সম্ভব না হয়, তা হলে চাকরিটাই ছেড়ে দেব। আমাকে যে ভাবে মারধর করা হয়েছে, তাতে আমি এই কলেজে কিছুতেই আর কাজ করতে চাই না।’’

শুভাশিসকে মারধরের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন অজয়। তিনি বলেন, ‘‘সেইসময় আমার মানসিক অবস্থা ভাল ছিল না। সেখানে যদি নিজের বাবাও থাকত, আমিতাকেও মারতাম। আমি তখন খুব রেগে গিয়েছিলাম। মাথায় রক্ত উঠে গিয়েছিল। পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমি নিজের অন্যায় স্বীকার করে নিচ্ছি।”

চাপড়ার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, "অধ্যক্ষ পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমরাও খোঁজখবর নিয়েছি। পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য বলেছি।" যদিও রাত পর্যন্ত পুলিশ অজয় ঘোষের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই জানা গিয়েছে।


Share