Murder

ভাঙড়ের পর মালদহ, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ তৃণমূলের নেতার বিরুদ্ধে, তদন্তে পুলিশ

পুলিশ সূত্রের খবর, গতকাল রাতে মালদহের ইংরেজবাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। দুই অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

মালদহে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ।
নিজস্ব সংবাদদাতা, ইংরেজবাজার
  • শেষ আপডেট:১১ জুলাই ২০২৫ ০৬:৩৩

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের পর এ বার মালদহে তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম আবুল কালাম আজাদ। জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলাকালীন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে। ওই তৃণমূল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মালদার ইংরেজবাজার থানার লক্ষ্মীপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পরে দু’জন আলাদা একটি ঘরে ছিলেন। সেই সময়ে তাঁদের মধ্যে বচসা বাধে। তার পরেই খুনের ঘটনা ঘটে বলে দাবি। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া লোকজন কিছু ক্ষণ পরে ওই ঘরে গিয়ে আবুল কালাম আজাদকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরে পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরাই আজাদের বাড়িতে খবর দেন।

ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। রক্তাক্ত অবস্থায় আবু কালাম আজাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছে।

জানা গিয়েছে, সাত বিঘা একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দু’জনের মধ্যে বিবাদ চলছিল। অভিযুক্ত মাইনুল হক ও তার পরিবারের দাবি, ওই জমির মালিকানা তাঁদের। অথচ আবুল কালাম আজাদ কাউকে না জানিয়ে সেই জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। এর পরেই দু’জনের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। 

আজাদকে খুনের অভিযোগে কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য মাইনুল শেখ-সহ দু’জনকে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ আটক করেছে। তৃনমুল কর্মী খুনের নেপথ্যে জমি সংক্রান্ত বিবাদ নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ ইংরেজবাজার এলাকার মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। অন্যদিকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মাইনুল হক কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। মাইনুল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে জিতলেও কয়েক মাস আগেই মালদহের জেলা তৃণমূলের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির হাত ধরে যোগদান করে। আবুল কালাম আজাদের বাড়ি মানিকচকের গোপালপুর এলাকায়। অন্যদিকে অভিযুক্ত মাইনুল হকের বাড়ি কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষীপুর এলাকায় বাসিন্দা।

এ দিন মৃত তৃণমূল কর্মী আবু কালাম আজাদের বাবা বলেন, “ছেলে একটা নিমন্ত্রণ বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বলেছিলাম। ও বলেছিল, ‘আমার সঙ্গে দুই বন্ধুর রয়েছে।’” তিনি আরও জানান, “আমার ছেলে জমি ব‍্যবসা করত। রাত ১২টা নাগাদ জানতে পারি, মাইনুল দলবল নিয়ে আমার ছেলের ওপর হামলা করেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মরে পড়ে রয়েছে। আমার ছেলেও তৃণমূল কর্মী ছিল।”

এই ঘটনার পরেই মালদহে ঘাসফুল শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ দলের কেউ নয় বলে কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে শাসকদল। শুক্রবার ইংরেজবাজার ব্লক এবং জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী প্রতিভা সিংহ বলেন, “আমি কিছুক্ষণ আগেই এই ঘটনার কথা জানতে পেরেছি। ২০১৮ সালে মাইনুল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু ওর নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। কার নেতৃত্বে ও দলে যোগ দিয়েছে আমি জানি না। আমি জানি ও কংগ্রেসেরই সদস্য। তৃণমূলের নয়।”


Share