Civic Volunteer

সালিশি সভা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণের দাবি, মালদহে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের

অভিযুক্তের নাম তারিক আনোয়ার। তিনি হরিশচন্দ্রপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার।

সিভিক ভলান্টিয়ার তারিক আনোয়ারের সঙ্গে মন্ত্রী তাজমুল হোসেন।
নিজস্ব সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর
  • শেষ আপডেট:০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৪৮

স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলা মেটাতে মাতব্বরেরা ডেকেছিল সালিশি সভা। সেই সভাতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা তথা এক সিভিক ভলান্টিয়ার। সেই সভায় বিবাদের মধ‍্যস্থতা হয়নি। তাই দম্পতির থেকে চাওয়া হয়েছিল দু’লক্ষ টাকা। সেই টাকা না পেয়ে ‘অপহরণ’ হয়ে গেল স্বামী। শেষমেশ পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার হয়েছে। শুধু তাই নয় অভিযোগ দায়ের করার পরে তা থেকে নাম তুলে নেওয়া জন্য দেওয়া হয় হুমকি। যুবকের দোকানেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত যুবক তারিক আনোয়ার রাজ‍্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে মন্ত্রী। সিভিক ভলান্টিয়ার তারিক আনোয়ারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জানা গিয়েছে, হরিশচন্দ্রপুরের নারায়ণপুরের বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে কয়েক মাস আগে বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা রিজওয়ানা পারভিনের বিয়ে হয়। কিন্তু দাম্পত্য জীবনের শুরুতেই বিবাদ শুরু হয়। দাম্পত্য জীবনের বিবাদের কথা কানে যায় রিজওয়ানার বাপের বাড়ির লোকজনের। এর পরেই তাঁরা সালিশি সভা ডাকেন। গত ২৩ অগস্ট বিহারে পূর্ণিয়ায় সালিশি সভা বসেছিল। আর তাতেই হাজির হন হরিশচন্দ্রপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার তারিক আনোয়ার।

সেই সালিশি সভায় মধ্যস্থতা হয়নি। অভিযোগ, তাই গোলামকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে অপহরণ করে সিভিক ভলান্টিয়ার। চাওয়া হয় দু’লক্ষ টাকা মুক্তিপণ। এই পরিস্থিতিতে গোলামের পরিবার এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। শেষমেশ বিহারে গিয়ে গোলামকে উদ্ধার করে পুলিশ।

সিভিক ভলান্টিয়ার জানতে পরে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর পরেই নাম তুলিয়ে নেওয়ার জন্য ক্রমাগত গোলামকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে গোলাম এবং তাঁর দাদার দোকানে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গোলামের পরিবারের অভিযোগ, দোকানে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি সেই কাজটা করেছে সিভিক ভলান্টিয়ার তারিক আনোয়ার। গোলামের পরিবারের আরও দাবি, অগ্নিকাণ্ডের পরে আনোয়ারের ফোন থেকে একটি ফোন আসে। তাতে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার বলেছেন, অভিযোগপত্র থেকে নাম না তুলে নিলে আরও বড় ক্ষতি হবে।

গোলামের পরিবারের কথায়, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার তারিক আনোয়ার এলাকায় প্রভাবশালী। হরিশচন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ‍্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের নাম ভাঙিয়ে তোলাবাজি করে। একে-ওকে হুমকি দেয়। ইতিমধ্যেই মন্ত্রী তাজমুলের সঙ্গে তারিকের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। তাই গোলামের পরিবারের অভিযোগ, মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ হওয়ায় জন্য পুলিশ তাঁকে ছুঁতে পারেনি। যদিও তারিকের পরিবার, তাঁদের ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন।

তারির আনোয়ার যে মন্ত্রী তাজমুল হোসেন ঘনিষ্ঠ, তা অস্বীকার করেননি তিনি। হরিশচন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, “অভিযোগ থাকতেই পারে। তার প্রমাণ থাকতে হবে। পুলিশ বাকিটা তদন্ত করবে।” বিজেপি একযোগে তৃণমূল এবং পুলিশকে আক্রমণ করেছে। তাঁদের বক্তব্য, “রাজ‍্যে কোনও আইনের শাসন নেই। তৃণমূলের কর্মীরাও তালিবানরাজের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।” এই বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “পুলিশ একটা অভিযোগ পেয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”


Share