Malda Medical College

‘মেডিকেল কলেজ নাকি ডেঙ্গির আঁতুড়?’, মালদায় পরিদর্শনে গিয়ে ধমক চেয়ারম্যানের

বর্ষা এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। তার আগেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত মালদা (Malda) জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ জন| এই ছবি দেখে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিলেন রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী|

এখন কলকাতা ডেস্ক
মালদা নিজস্ব চিত্র
  • শেষ আপডেট:০৮ জুন ২০২৫ ১২:০০

বর্ষা এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। তার আগেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত মালদা (Malda) জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯২ জন। তবে তাতে কী? মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালেই সচেতনতার কোনও বালাই নেই। মেডিকেলে যেখানে নির্মাণকাজ চলছে, সেখানে নিকাশিনালার মুখ বন্ধ হয়ে রয়েছে। বৃষ্টির জল জমে রয়েছে। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে মশার লার্ভা। ডেঙ্গি নিয়ে যখন জেলায় উদ্বেগ বাড়ছে তখন মেডিকেল কলেজের এই ছবি দেখে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিলেন রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই শুক্রবার সকালে মালদা মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে যান তিনি। পরিস্থিতি দেখে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্মীকে রীতিমতো ধমক লাগান। ‘এটা মেডিকেল কলেজ নাকি ডেঙ্গির আঁতুড়?’ কৃষ্ণেন্দু বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার কর্মীকে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘এখানে মানুষ সুস্থ হতে আসে৷ হাসপাতালকে আপনারা খেলার জায়গা পেয়েছেন?’ যদিও ওই কর্মী কোনও উত্তর দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। এরপর চেয়ারম্যান ওই বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার লোকেদের সঙ্গে ফোন কথা বলেন। আগামী সপ্তাহেই ওই কাজ ঠিক ক? 

এদিকে, বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার ঢিলেমিতে এরকম পরিস্থিতি বলে জানিয়েছেন মেডিকেল সুপার প্রসেনজিৎ বর। তাঁর কথায়, ‘বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযোগ নিয়ে আমরা বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাকে চিঠি করে থাকি। তবে অনেক ক্ষেত্রেই সংস্থার ঢিলেমি দেখা যায়। সমস্ত রিপোর্ট আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি।’স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে মালদা জেলা রাজ্যে অষ্টম স্থানে ছিল। গত সপ্তাহে নতুন করে ১২ জন আক্রান্ত হওয়ার পর মালদা জেলা রাজ্যে আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে। গত বছর এই সময় মালদা জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩৮। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা ৯২। ওই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে খানিকটা স্বস্তিতে রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর।? 

তবে আর যেন বাড়বাড়ন্ত না হয় সেজন্য এদিন মেডিকেলে পরিদর্শনে যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ। মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ক্যাম্পাসের উত্তর প্রান্তে তৈরি হচ্ছে পিজি বিল্ডিং৷ সেই কাজের বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা ওই এলাকার পুরো দখল নিয়েছে৷ সেই বহুতল তৈরির জন্য একাধিক বড় বড় গর্ত করা হয়েছে। সেই গর্তে বৃষ্টির জল কয়েক সপ্তাহ ধরে জমে রয়েছে৷ গর্ত থেকে তোলা মাটি বৃষ্টির জলের সঙ্গে বয়ে গিয়ে একাধিক নিকাশিনালায় পড়েছে। এতে নালার মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর সেখানেই মশার লার্ভা দেখা যাচ্ছে৷শুধু তাই নয়, ট্রমা কেয়ার বিভাগ ও বহির্বিভাগের শৌচালয় ও নিকাশিনালার পরিস্থিতি দেখেও ক্ষুব্ধ তিনি।কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। বাইরের জল আমরা বের করে দিয়েছি। কিন্তু মেডিকেলের ভিতরের নির্মাণকাজের দিকের নালাগুলো আপাতত এই বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার নিয়ন্ত্রণে। এই সংস্থার কাজের কোনও ঠিক নেই। এদিক-ওদিক গর্ত করা রয়েছে। সেখানে জমা জলে মশার লার্ভা দেখা যাচ্ছে। এভাবে কাজ করার জন্য যদি প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ জন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন, তবে কি ওই সংস্থার পা ধরে আমাদের কথা বলতে হবে?’? 


Share    

হাইলাইটস