Police Allegedly Selling Seized Fish At Market

তোলার টাকা না পেয়ে আড়তে এসে আটক করা মাছ বিক্রি করে দিচ্ছে পুলিশ! সমাজমাধ্যমে বিস্ফোরক অভিযোগ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর অধিকারীর

আটক করা ইলিশ মাছ বিক্রি করতে আড়তে গিয়েছেন পুলিশ আধিকারিক। সোমবার সমাজমাধ্যমে এমনই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লিখেছেন, “মমতা পুলিশের তোলাবাজি দিনকে দিন দুর্নীতির নতুন শৃঙ্গে উত্তরণ করছে।”

নগেন্দ্রবাজারে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ ব‍্যবসায়ীদের।
নিজস্ব সংবাদদাতা, মগরাহাট
  • শেষ আপডেট:০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০৪

মেলেনি তোলার টাকা। তাই মাছের আড়তে এসে আটক করা ইলিশ মাছ বিক্রি করে দিচ্ছে পুলিশ। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট বাজারে। জানা গিয়েছে, আড়তে আসতেই পুলিশকে ঘিরে ব‍্যবসায়ীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো (এখন কলকাতা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) পোস্ট করে এমনটাই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, ‘মমতার পুলিশের তোলাবাজি দিনকে দিন দুর্নীতির নতুন শৃঙ্গে পৌঁছে গিয়েছে।’ 

শুভেন্দুবাবুর অভিযোগ, গত কিছুদিন যাবৎ ডায়মণ্ড হারবারে মাছের আড়ত থেকে ইলিশ মাছ কিনতে যাওয়া ছোটো মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গাড়ি প্রতি চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পুলিশ দাবি করছিল। তাঁর কথায়, টাকা দিতে না পারলেই ছোটো ইলিশ বিক্রির করার ভুয়ো অভিযোগ তুলে মাছ ভর্তি গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা আটাকে রাখা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, একটি ইলিশ মাছ ভর্তি গাড়ি ধরেছিলেন সৈকত রায় নামে এক মগরাহাট থানার আধিকারিক। পুলিশের অভিযোগ, সেই গাড়ি করে ছোট ইলিশ মাছ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মাছ ব‍্যবসায়ীদের দাবি, তাঁরা ছোট ইলিশ মাছ কেনেনি। ব‍্যবসায়ীদের অভিযোগ, আটক করা মাছের গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা। যে টাকা চাওয়া হয়েছিল, তা তাঁরা দিতে পারেনি। সারা দিন কেটে যাওয়ার পর যখন তিনি (সৈকত রায়) দেখেন, যে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ‘তোলা’ পাওয়া যাবে না, তখন বিকেলের দিকে তিনি নিজেই ডায়মণ্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারের মাছের আড়তে পৌঁছে যান। অভিযোগ, আটক করা গাড়িতে যে মাছ ছিল, তা বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। 

শুভেন্দুর দাবি, তখনই মাছ ব্যবসায়ীরা তাঁকে হাতে নাতে ধরে ফেলেন। সৈকত রায়কে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মাছ ব্যবসায়ীদের আরোও অভিযোগ, “দুই (সিনটেক্স) পেটি ইলিশ মাছ গাড়ি থেকে পুলিশ ইতিমধ্যেই চুরি করে সরিয়ে ফেলেছে।” যদিও এই বিষয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, “মমতা পুলিশের তোলাবাজি দিনকে দিন দুর্নীতির নতুন শৃঙ্গে উত্তরণ করছে।” তাঁর কথায়, তাঁরা যে সরকারি বেতন পায়, তাতে তাঁরা অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, “আদ্যোপান্ত দুর্নীতিগ্রস্ত তথাকথিত "আইন রক্ষক"-এর দল নিজেরাই চৌর্যবৃত্তির পথ অবলম্বন করছে। এ ছাড়াও তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাম না করে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, “কীভাবে এই চুরির সাম্রাজ্য বিস্তার করা যায়, সেই পথ দেখায় ডাকাত সম্রাটের ডায়মণ্ড হারবার মডেল।”

বিরোধী দলনেতার আরও অভিযোগ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতায় এ রাজ্যের পুলিশ এখন 'তোলাবাজ পুলিশ' এর শিরোপা পেয়েছে। পুলিশ আসামী-দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য নয়, তোলাবাজির জন্যেই যেন মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তায় যত্রতত্র ট্রাক বা ছোটো বাণিজ্যিক গাড়ি থেকে তোলা ওঠানোই এখন তাদের প্রধান কাজ।” এর পাশাপাশি, নির্বাচনে সরকারকে উৎখাত করারও ডাক দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।


Share