Assault On Woman

মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে অত‍্যাচার! আটক দুই ওঝা

ঘটনাস্থলে যায় রামপুরহাট থানার পুলিশ। লাঠিচার্জ করে গ্রামবাসীদের ছত্রভঙ্গ করে। গৃহবধূকে উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে।

মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধূকে অত্যাচার করার অভিযোগ।
নিজস্ব সংবাদদাতা: রামপুরহাট
  • শেষ আপডেট:০৭ জুলাই ২০২৫ ০২:৪৯

শরীরে ভর করেছে ডাইনি, এই অপবাদে মানসিক ভারসাম্যহীন গৃহবধূকে অর্ধনগ্ন করে নাচানোর অভিযোগ উঠল দুই ওঝার বিরুদ্ধে।

গতকাল রবিবার বীরভূমের রামপুরহাট থানার তাঁতবান্দা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে রামপুরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। দুই ওঝাকে পুলিশ আটক করেছে। আক্রান্ত গৃহবধূকে উদ্ধার করে বীরভূমের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহিলার স্বামীকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

জানা গিয়েছে, ওই মহিলা দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। বহু চিকিৎসা করিয়েছে তার পরিবার। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। শেষমেশ ওই পরিবার আর কোনও উপায় না পেয়ে ওঝার শরণাপন্না হয়।

ওঝা দেখাশোনার পরে জানান, গৃহবধূকে ডাইনিতে ধরেছে। শরীর থেকে ডাইনি তাড়াতে হলে পুজো করতে হবে। এরমই উপায় অবলম্বন করলেই হলেই সমস্ত অসুখ সেরে যাবে। সেই মর্মে গৃহবধূর পরিবার পুজোর খরচের জন্য দুই পাড়ার প্রায় ৫০-৬০ পরিবার থেকে চাঁদাও তোলে। সেই মতো গতকাল রবিবার সকালে দুই ওঝা গ্রামে পৌঁছোন। গ্রামেরই একটি বেদিতে পুজো শুরু হয়। অভিযোগ, এর পর সেখানে ওই বধূকে অর্ধনগ্ন করে নাচানো হয়েছে। সেই দৃশ্য দেখতে গ্রামবাসীরা ভিড় জমান।

ওই গৃহবধূর রীতিমত অত্যাচার করা হচ্ছে দেখে প্রতিবাদ জানান সন্তোষ মির্ধা নামে এক গ্রামবাসী। তিনিই রামপুরহাট থানায় খবর দিয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ পৌঁছতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে গ্রামবাসীদের সেখান থেকে সরিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করে। তিনি এখনও রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুই ওঝাকেও আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এক জন মহিলা রয়েছেন। দুই ওঝা সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ড থেকে এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

আক্রান্ত বধূর ছেলে অজয় রায়ের বক্তব্য, “মা দীর্ঘ দিন ধরেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিল। চিকিৎসা করিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই গ্রামবাসীরা মিলে ওঝা ডেকে রোগ দূর করাচ্ছিলাম” 

সন্তোষ মির্ধা বলেছেন, “এরকম ঘটনার খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই। গিয়ে দেখলাম, পুজোর নামে এক গৃবধূকে অর্ধনগ্ন করে নাচানো হচ্ছে। আমি গ্রামবাসীদের সামনে এ ভাবে এক মহিলাকে হেনস্থা করার প্রতিবাদ করি। এর পর সেখান থেকে পালিয়ে এসে রামপুরহাট থানায় খবর দিই।”


Share