বিস্কুট কিনতে গিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক শিশুর। গতকাল, শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি রাজ্য সড়কের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মোহিতনগর নাউয়াপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত শিশুটির নাম অভি রাউত। ওই ঘটনার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শিশুটির মৃতদেহ রাস্তার ওপর রেখে রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী। লরি ও চালককে আটক করেছে পুলিশ।?
তার বাড়ি জলপাইগুড়ি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশনবাজার এলাকায়। তার মায়ের নাম জয়ন্তী রাউত। স্বামী বিভীষণ রাউত বছর কয়েক আগে মারা গিয়েছেন। জয়ন্তীর পাঁচ ছেলেমেয়ে। ভাইবোনদের মধ্যে অভি ছোট। জয়ন্তী পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। নাউয়াপাড়া এলাকায় রাজ্য সড়কের পাশেই থাকেন জয়ন্তীর দাদা রাজকুমার শর্মা। শুক্রবার জমি থেকে আলু তোলার জন্য বোন জয়ন্তীকে ডেকে নিয়ে যান নিজের বাড়িতে। এ দিন সকাল থেকে রাজকুমারের বাড়ির পাশের একটি জমিতে জয়ন্তী এবং দাদার পরিবারের সকল সদস্য মিলে আলু তোলার কাজ শুরু করেন। সেই সময় মায়ের সঙ্গে ছোট্ট অভিও জমিতেই ছিল। মায়ের নজর এড়িয়ে কখন সে বিস্কুট কিনতে রাস্তায় চলে গিয়েছিল কেউ টের পাননি। আর সেই বিস্কুট কিনতে গিয়েই ঘটল বড় বিপদ। স্থানীয় ব্যবসায়ী মণিকা রায় বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল আলুবোঝাই ট্রাক। আচমকাই বাচ্চাটি এসে এক প্যাকেট বিস্কুট কিনে নিয়ে এক দৌড়ে রাস্তা পার হতে যায়। সেই সময় একটি দ্রুতগতিতে আসা ট্রাক বাচ্চাটিকে চোখের সামনে পিষে দিল।'?
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রতি বছরই আমাদের এখানে আলুর গাড়ির লাইন পড়ে যায়। যাতায়াতের একটা বড় সমস্যা তৈরি হয়। গত বছরেও এই সময়ে এখানে দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা বারবার প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়ে এসেছি, যাতে রাস্তার ওপর কোনও আলুবোঝাই ট্রাক না দাঁড়ায়। আজ আবারও একই দুর্ঘটনা ঘটল।”?
ঘটনার পর শিশুটির মৃতদেহ রাস্তায় ওপর রেখে প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। মৃতের মা জয়ন্তী বলেন, “আমার সঙ্গে অভি মাঠেই ছিল। কিন্তু কখন যে সে রাস্তায় চলে এসেছে আমি বুঝতেই পারিনি। রাস্তায় দুর্ঘটনা হয়েছে শুনে এসে দেখি আমার অভি আর নেই।”?
শনিবার জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, “পথ দুর্ঘটনায় একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ট্রাক এবং তার চালককে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”?