CM Meet Injured BJP MP At Hospital

‘ঠিক আছেন, সিরিয়াস কিছু নয়’ আক্রান্ত এবং আহত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

সোমবার দুর্যোগকবলিত জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানে গিয়ে বিজেপির দুই প্রতিনিধি বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বাঁশ, লাঠি দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সাংসদের গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি পাথর ছোড়া হয়।

খগেন মুর্মুর সঙ্গে কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি
  • শেষ আপডেট:০৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:১৬

জখম মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির হাসপাতালে বিরোধী দলের সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে যান। এর পরে তাঁর বেশ কিছু ক্ষণ কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংসদের ছেলে এবং স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মালদহ উত্তরের আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর পরিবারের সদস্যেরা জানান, কোথায় আঘাত পেয়েছেন সাংসদ, তার খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন হাসপাতালে খগেনের শয্যার পাশে দাঁড়ানো সাংসদ-পুত্রকে মমতা জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘ওঁর কি ডায়াবেটিস রয়েছে? ইনসুলিন নেন? ওষুধ খান? টেক কেয়ার করেন? দেখান ভাল করে? খাওয়া-দাওয়া কন্ট্রোল করেন?’’ খগেনের ছেলে বলেন, ‘হ্যাঁ’। তিনি প্রবীণ সাংসদকে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংসদের পরিবারের সদস্যদের মমতা জানান, যে কোনও প্রয়োজনে তিনি পাশে রয়েছেন। অন্যত্র চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও যেন তাঁকে বলা হয়। আক্রান্ত সাংসদের চিকিৎসার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বেশ কিছু ক্ষণ হাসপাতালের ভিতরে থাকার পরে বেরিয়ে আসেন তিনি। বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এমনি ঠিক আছেন। সিরিয়াস কিছু নয়। যাঁদের ডায়াবেটিস থাকে, তাঁদের একটু পর্যবেক্ষণে বেশি থাকতে হয়। ওঁর কানে একটু বেশি লেগেছে। চিকিৎসকদের রিপোর্ট ইত্যাদি আমি দেখেছি। উনি এখন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ওঁর ডায়াবেটিস আছে। ডায়াবিটিস কন্ট্রোল করতে হয়। আমি প্রার্থনা করেছি। ওঁকে বলেছি। ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছি।’’ সাংসদকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হবে কি না প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এমন সিরিয়াস কিছু নয়।’’

সোমবার দুর্যোগকবলিত জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানে গিয়ে বিজেপির দুই প্রতিনিধি বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বাঁশ, লাঠি দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সাংসদের গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি পাথর ছোড়া হয়। বেশি জখম হন খগেন। মারের চোটে গলগল করে রক্ত বেরোতে থাকে তাঁর নাক-মুখ থেকে। শঙ্করকেও ধাক্কা দিয়ে চড়-ঘুষি মারার চেষ্টা হয়। 

ঘটনার পরে শঙ্করের অভিযোগ, কয়েক জন ‘দিদি-দিদি’ বলতে বলতে পিছন থেকে তাঁদের আক্রমণ করেন। বর্তমানে খগেন এবং শঙ্কর হাসপাতালে রয়েছেন। খগেনের বাঁ চোখের নিচের হাড়ে আঘাত লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর তুঙ্গে ওঠে। 

নাগরাকাটায় ওই ঘটনার নিন্দা করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘যে ভাবে আমাদের দলের সহকর্মীরা— যাঁদের মধ্যে এক জন বর্তমান সাংসদ ও বিধায়কও রয়েছেন—পশ্চিমবঙ্গে বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটি তৃণমূল কংগ্রেসের অসংবেদনশীলতা এবং রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার করুণ রূপের স্পষ্ট প্রতিফলন।’’ 

তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই এর পাল্টা তৃণমূলনেত্রী মমতা অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজনীতি করতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রেক্ষিতে তিনি সমাজমাধ্যমে বলেন, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক এবং গভীর উদ্বেগের যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যথাযথ তদন্তের অপেক্ষা না করেই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের রাজনীতিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করছেন।’’


Share