Sandeshkhali Crash Conspiracy

সন্দেশখালির বয়ারমারি দুর্ঘটনা-কাণ্ডে গ্রেফতার ১৬ চাকার ট্রাকের খালাসি, এখনও পর্যন্ত মোট ধৃত তিন

বয়ারমারিতে ট্রাকের ধাক্কায় দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার ট্রাকের খালাসি। সিবিআই মামলার সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষের নিরাপত্তা বাড়াল পুলিশ। মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরা, তদন্ত চলছে।

ধৃত ট্রাকের খালাসি
নিজস্ব সংবাদদাতা, সন্দেশখালি
  • শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৫৮

উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বয়ারমারিতে চার চাকার একটি ছোট গাড়িকে মুখোমুখি ধাক্কা দেওয়া ১৬ চাকার ট্রাকের ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। গত বুধবার, ১০ ডিসেম্বর সকালে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনায় খুন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে সন্দেশখালির এক সময়ের ত্রাস হিসেবে পরিচিত শেখ শাহজাহান, তাঁর স্ত্রী তসলিমা বিবি-সহ মোট ন'জনের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এ বার ট্রাকটির খালাসিকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম গোলাম হোসেন মোল্লা। তাঁর বাড়ি সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকার হাটগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুরহাটিতে। শনিবার রাতে ন্যাজাট থানার পুলিশ খড়মপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অভিযোগকারী ভোলানাথ ঘোষ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া সিবিআই মামলার অন্যতম প্রধান সাক্ষী। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানানোয় রবিবার সকালে সরবেড়িয়ায় ভোলানাথের বাড়িতে ন্যাজাট থানার তরফে দু’জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।

রবিবার ভোলানাথ বলেন, 'আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলাম। প্রশাসনকে জানানোর পরে পুলিশের তরফে আমার বাড়িতে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ট্রাকের চালক এবং অন্য যাঁদের বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করেছিলাম, তাঁদের কেউ ধরা পড়েননি। আশা করছি, পুলিশ শিগগিরই তাঁদের গ্রেফতার করবে।'

শনিবার রাতে গ্রেফতার গোলাম হোসেনকে রবিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এর আগে শুক্রবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল রুহুল কুদ্দুস তরফদার ও সুশান্ত সর্দার ওরফে উত্তমকে। তদন্তকারীদের দাবি, উত্তমের কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল তথ্য প্রমাণ উদ্ধার হয়েছে।

ভোলানাথের অভিযোগ, ১০ ডিসেম্বরের ঘটনার দিন বসিরহাট আদালতের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর তাঁদের গাড়িকে একটি মোটরবাইক অনুসরণ করছিল। সেই বাইকে থাকা নজরুল মোল্লা রুহুল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, সুশান্ত সর্দার ওরফে উত্তমকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল, পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

তবে ভোলানাথের অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া এফআইআরে নাম থাকা শেখ শাহজাহান-সহ নয় জনের কাউকেই এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। রবিবার এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোলানাথের বড় ছেলে বিশ্বজিৎ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, 'যাঁদের নাম বাবার অভিযোগপত্রে নেই, তাঁদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে। আর যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের কেউ কেউ বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।' তাঁর বক্তব্য, 'আমাদের নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বাইরে বেরোলে কে দেখবে?'

পুলিশের একাংশের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ-সহ বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই বয়ারমারির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।


Share