Krishnanagar Murder Case

কৃষ্ণনগরে কলেজছাত্রী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ, নেপাল সীমান্ত থেকে পাকড়াও

গত সোমবার কৃষ্ণনগরের বাড়ির দোতলায় উঠে কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিককে গুলি করে খুন করা হয়। তার পর থেকেই গা ঢাকা দেয় মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ। অবশেষে তাঁকে কোতয়ালি থানায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

ঈশিতা মল্লিক খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর
  • শেষ আপডেট:০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৩৯

অবশেষে কৃষ্ণনগরে কলেজছাত্রীকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে উত্তরপ্রদেশ থেকে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে গুজরাতের জামনগর থেকে দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বার ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশ।

গত সোমবার কৃষ্ণনগরের বাড়িতে ঢুকে ঈশিতা মল্লিককে গুলি করে খুন করা হয়। জানা যায়, ঈশিতার মাথায় তিনটি গুলি লাগে। ওই ঘটনার পরে দেশরাজ উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় পৈতৃক বাড়িতে পালিয়ে যায় বলে অনুমান করে পুলিশ। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তল্লাশির পরেও পুলিশ দেশরাজের খোঁজ পায়নি।

দেশরাজ সিংহ কাঁচড়াপাড়ার ভারা বাড়িতে মা-বোনের সঙ্গে থাকতে দেশরাজ। বাবা বিএসএফ জওয়ান। দেশরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে কৃষ্ণনগরের কলেজছাত্রীকে খুন করেছে। প্রথমিক ভাবে জানা যায়, দেশরাজের সঙ্গে ঈশিতা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে নারাজ ছিলেন। কিন্তু দেশরাজ ঈশিতার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে জোর খাটান। এর জন্য তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি, আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন বলে ভিডিয়ো করে ঈশিতাকে পাঠান। তার পরেও প্রেমিকার মন গলায় খুন করার পরিকল্পনা করে ধৃত দেশরাজ সিংহ। এসব বিষয়ে নিশ্চিত হতেই দেশরাজকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা।

গত শনিবার দেশরাজ সিংহের মামা কুলদীপ সিংহকে গুজরাতের জামনগর থেকে গ্রেফতার করে কৃষ্ণনগরের পুলিশ। মামাকে গ্রেফতার করেই ভাগ্নের খোঁজ পাওয়া যাবে বলে মনে করেছিল তদন্তকারীরা। আদতে তা-ই হল। কুলদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, খুন করার পরে প্রথমে মামার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন দেশরাজ সিংহ। কুলদীপই ভাগ্নে দেশরাজকে ভুয়ো নথি বানিয়ে পালাতে সহায়তা করে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশের ওই যুবক সম্পর্কে আগেই অনেক তথ্য পেয়েছিল তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে পারে, দেশরাজের দুই আত্মীয় মঙ্গল সিংহ এবং দঙ্গল সিংহের বিরুদ্ধে খুন-সহ ৪০টি অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েক দিন আগেই তাঁরা ছাড়া পান। কৃষ্ণনগরকান্ডের পরে দেশরাজ তাঁদের আশ্রয়ে থাকতে পারে বলেও অনুমান করেছিল পুলিশ। দেশরাজের দাদু (মায়ের বাবা) সরয়ূপ্রসাদ সিংহ এলাকার দাপুটে ‘মুখিয়া’। এ ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে দেশরাজের এক খুড়তুতো ভাই থাকেন। নাম নিতিন প্রতাপ সিংহ। কলেজছাত্রীকে খুনের আগে দেশরাজ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে জানতে পারে তদন্তকারীরা। দু’জন মিলে খুনের পরিকল্পনা করেছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। দেশরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে চাইছেন তদন্তকারীরা।


Share