BJP Worker Was Hit by Own Party’s Councillor

দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে কর্মীকে জুতোপেটা বিজেপি মহিলা কাউন্সিলরের! অকথ‍্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ, ভিডিয়ো ভাইরাল

সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই বিজেপি অস্বস্তিতে পড়েছে। তাঁরা গোটা ঘটনার নিন্দা করেছে। বিজেপি নেত্রীর দাবি, “আবার মারব।” কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।

বিজেপি কর্মীকে জুতোপেটা করার অভিযোগ দলীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
নিজস্ব সংবাদদাতা, খড়্গপুর
  • শেষ আপডেট:১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০২:১২

বিজেপির কার্যালয়ে ঢুকে দলীয় কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন মহিলা কাউন্সিলর এবং বিজেপি কর্মী। বিজেপি কর্মীকে জুতোপেটা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। তোলাবাজি এবং জুতোপেটার অভিযোগ এনে মহিলা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই বিজেপি কর্মী। পাল্টা মহিলা কাউন্সিলর জানান, “প্রয়োজনে আবার মারব!” খড়্গপুরের একই দলের কর্মী এবং কাউন্সিলরের লড়াইয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব‍্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপ করার কথা বলেছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।

স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি শনিবারের। অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রীর নাম মমতা দাস। তিনি খড়্গপুর পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। অভিযোগ, ওই এলাকার সক্রিয় বিজেপি কর্মী অশোক সিংহের সঙ্গে বচসায় জড়ান। এর পরেই দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে অশোককে জুতো দিয়ে মারেন তিনি। ইতিমধ্যেই একটি ভিডিয়ো (এখন কলকাতা এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, অশোক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার মধ্যেই মমতা দাস জুতো দিয়ে দু’বার মারেন। নিজের জুতো খুলে কাউন্সিলররকে মারার চেষ্টা করে বিজেপি কর্মী অশোক সিংহ। কিন্তু ক‍্যামেরা দেখে নামিয়ে নেন। ভিডিয়োতে অশোককে বলতে শোনা যাচ্ছে, “দেখুন আপনারা, আমাকে চপ্পল দিয়ে কী ভাবে মারছে। এখনই আমি পুলিশ ডাকছি।” এর পরেই অশোক বলছে, “মহিলা হওয়ার সুবিধা নিয়ে নে।” পাল্টা কাউন্সিলর বলছেন, “তোর মতো চর নই আমি… টাকা চাওয়ার প্রমাণ দেখা।”

বেশ কিছু দিন আগে খড়্গপুরে এক বৃদ্ধকে মারধর করে মুখে কালি মাখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে। বেবি কোলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও করেছিল তৃণমূল। এ বার বিজেপির কাউন্সিলর এবং দলীয় কর্মীর কর্মকাণ্ড নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে খড়্গপুরে। ভাইরাল ভিডিয়ো প্রসঙ্গে বিজেপি কর্মী অশোক সিংহের বক্তব্য, “২০২২ সালে আমি ওঁকে জিতিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। এখন খুব বড় হয়ে গিয়েছে।” কিন্তু কী নিয়ে এই দ্বন্দ্ব? বিজেপি কর্মী বলেন, “ওই ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার ধারে চাউমিনের দোকান বসানোর কথা কাউন্সিলরকে বলেছিলেন। কিন্তু কাউন্সিলর শনিবার তার কাছে দশ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তার প্রতিবাদ করতেই, এক জনকে সঙ্গে নিয়ে পার্টি অফিসে ঢুকে আমাকে জুতো দিয়ে মারার চেষ্টা করেন।” এই নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় দলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন অশোক। এর পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন‍্যদিকে অশোক সিংহের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন কাউন্সিলর মমতা দাস। তাঁর দাবি, অশোক তাঁর গায়ে আগে হাত দিয়েছে। অশ্রাব‍্য ভাষায় গালিগালাজও করেছে। মমতা বলেন, “রাস্তায় বেরোলেই ছেলেদের পিছনে লাগিয়ে দেয়। সেই জন‍্যই মেরেছি।” এর পাশাপাশি অশোক সিংহকে দলীয় কর্মী মানতে নারাজ তিনি। মমতার দাবি, “অশোক সমাজবিরোধী। ও বিজেপি করে না তৃণমূলও করে না। কোনও দল ওকে নিতে চায় না।”

ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা বিজেপি। রবিবার কাউন্সিলরের এই কান্ডের নিন্দা করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিজেপি নেতা অরূপ দাস। অরূপের দাবি, বিজেপি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল, তৃণমূলের মতো বিশৃঙ্খল নয়। এই ঘটনা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। বিজেপির এই কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলও। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। অশোক সিংহ নিজেই তোলাবাজ। ওদের মধ্যে তোলা নিয়ে কী গন্ডগোল হয়েছে, তা বলতে পারব না।”


Share