Illegal Wetland Constructions Surge

পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে দেদার বেআইনি গোডাউন! ধাপা–মানপুরে ভরাটে উদ্বেগে স্থানীয়রা

পূর্ব কলকাতা জলাভূমির ধাপা-মানপুরে দেদার বেআইনি গোডাউন নির্মাণ! স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় জলাভূমি ভরাট চলছে অনায়াসে। আদালতের ভাঙার নির্দেশ মানা হচ্ছে না, রাজনৈতিক মদতের অভিযোগও তোলা হয়েছে।

প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা, ভাঙড়
  • শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৫:১৪

জলাভূমি এলাকায় যে কোনও নির্মাণ আইনত দণ্ডনীয়। জলাভূমি সুরক্ষায় বিশেষ আইন থাকার পরও পূর্ব কলকাতা জলাভূমির ধাপা-মানপুর মৌজায় দেদার বেআইনি নির্মাণ চলছে, এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে।

বাসন্তী রাজ্য সড়কের লাগোয়া ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বামনঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের গুরুমারা ও বকডোবা এলাকায় জলাভূমি ভরাট করে একের পর এক গোডাউন তৈরি হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েকটি ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হলেও ভরাটের কাজ বন্ধ হয়নি। জলাভূমির জমি সমতল করে ইটের দেওয়াল তুলে টিনের ছাউনি দিয়ে তিন-ছ'হাজার বর্গফুট আয়তনের গোডাউন গড়ে তোলা হয়েছে। এমনকি, সেই গোডাউনে পৌঁছনোর জন্য কংক্রিটের রাস্তাও বানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর আগে কলকাতা হাইকোর্ট পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকায় মোট ১২টি গোডাউন ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল। এর মধ্যে তিনজন মালিক সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করেন। তবে বাকি গোডাউন ভাঙতে ইকেডব্লুএমএ, বিডিও ও বিএলআরও এলাকার রেকর্ডে সব গোডাউনের দাগ নম্বর একই থাকায় কোনওটিকে নির্দিষ্ট করে শনাক্ত করতে পারেননি। সেই সুযোগে ভাঙড়ের দক্ষিণ ধাপা-মানপুর মৌজা (জেএল-১, আরএস দাগ ২১৫৮) এলাকায় পাঁচটি গোডাউন চিহ্নিত করে নতুন নোটিস জারি করেছে ওয়েটল্যান্ড অথরিটি, যা নিয়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।

শনিবার গুরুমারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া ওই জলাভূমির উপর শক্ত ইটের গাঁথনি ও লোহার দরজাযুক্ত বিশাল গোডাউন তৈরি। কাঠামো এতটাই বড় যে ভিতরে ট্রাক ঢোকা যায়। অভিযুক্ত মালিকদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর সল্টলেকে ইকেডব্লুএমএ অফিসে শুনানিতে ডাকা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, এর আগেও থানায়, পঞ্চায়েতে, বিডিও অফিসে এবং ইকেডব্লুএমএ-র কাছে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে।

জলাভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ভাঙড়ের আইএফএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি বলেন, 'পুলিশ প্রশাসনের একাংশ ও কিছু তৃণমূল নেতার মদতে নিউটাউন লাগোয়া বেওতা ১ ও ২ এবং বামনঘাটা পঞ্চায়েত এলাকায় জলাভূমিতে অবৈধ নির্মাণ চলছে। বিষয়টি বিধানসভাতেও জানিয়েছিলাম।'

অন্যদিকে তৃণমূল নেতা প্রদীপ মণ্ডলও ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মুখ্যমন্ত্রী জলাভূমি রক্ষার কথা বলছেন, অথচ দলেরই কিছু মানুষ জলাভূমি ভরাট করে বিরাট অঙ্কের অর্থ রোজগার করছেন। এটা বন্ধ হওয়া জরুরি।

ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাদের কাছে অভিযোগ এলে তাঁরা ওয়েটল্যান্ড অথরিটিকে পাঠায় এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে।

জলাভূমি সুরক্ষা আইনের পরোয়া না করে এমন নির্মাণ নিয়ে এলাকাজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে।


Share