Election Commission of India

দেশব্যাপী হবে এসআইআর! দিল্লির পথে সব রাজ্যের সিইওরা, আগামী বুধবার হবে কনফারেন্স

সকাল ৯টা থেকে সিইওরা সেখানে আসবেন। সকাল ১০টার সময় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার কনফারেন্সে যোগদান করবেন। প্রায় ন’ঘন্টা ধরে আলোচনা চলবে।

১০ সেপ্টেম্বর সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সিইওদের তলব নির্বাচন কমিশনের।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট:০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৩৯

বিহারের পরে এ বার পশ্চিমবঙ্গেও হবে বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর)। শুধু তাই নয় দেশজুড়ে হতে চলেছে এসআইআর। সেই মর্মে সব রাজ‍্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের দিল্লিতে ডাকল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেখানে কীভাবে সারা দেশে একযোগে এসআইআর করা যায় সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। দেশের নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সেই কনফারেন্সে যোগদান করবেন।

কমিশন সুত্রের খবর, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল থেকে শুরু হবে সেই কনফারেন্স। সকাল ১০টার সময় নির্বাচন কমিশনার সেই কনফারেন্সে যোগদান করবেন। তার আগে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সমস্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকেরা পৌঁছে যাবেন। সকাল সাড়ে ন’টা থেকে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর) নিয়ে কনফারেন্সটি হবে দিল্লির দ্বারকায় ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেমোক্রাসি অ্যান্ড ইলেকশন ম‍্যানেজমেন্টে।

এই কনফারেন্সে মূলত দেশব‍্যাপী এসআইআর কীভাবে চালু করা যায়, তা নিয়ে। রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকেরা তাঁদের মতামত জানতে পারবেন। কমিশন সুত্রের খবর, এসআইআর চালু করার বিষয়ে নিজেদের রাজ্যের প্রস্তুতি কতটা, তা-ও নির্বাচন কমিশনারকে সিইওরা জানাতে পারেন। দীর্ঘ ন’ঘন্টা ধরে চলবে কনফারেন্স। এর মাঝে পৌনে ১২টা নাগাদ চায়ের বিরতি দেওয়া হয়েছে। দেড়টার সময় হবে দুপুরের খাওয়া এবং বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ফের একটা চায়ের বিরতি দেওয়া হয়েছে। এর পরে নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার মুখ‍্য নির্বাচনী আধিকারিকদের প্রশ্নত্তোর পর্বে যোগ দেবেন।

সম্প্রতি বিহারে বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর)-এর পরে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ যায়। এর মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে অভিযোগ ওঠে। সেই জল গড়ায় শীর্ষ আদালতে। বুধবার বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকও উপস্থিত থাকবেন। জানা গিয়েছে, বিহারে এসআইআর কীভাবে হয়েছে, অল্প সময়ের সেটা কীভাবেই বা সফলভাবে করা গিয়েছে, তা আলাদা করে তিনি ওই দিন দেখাবেন। সেই কৌশলের প্রদর্শনী হবে সাকাল ১১টা ১৫ মিনিট থেকে।

এ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট রাজ্যে শেষ কবে এসআইআর হয়েছে সেটাও রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সিইওদের জানাতে হবে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ‍্যে বর্তমানে ভোটারের সংখ্যা কত, গতবারের এসআইআর পরে এখন কত ভোটার বেড়েছে, এ সবই পাঁচ মিনিটের একটা পাওয়ার পয়েন্ট করে দেখাতে হবে। সেই পাওয়ার পয়েন্টে, গতবারের এসআইআরের পরে ভোটারের সংখ্যা কত ছিল, সেটারও উল্লেখ থাকতে হবে।

ওই দিনের রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রগুলির তথ্যও তুলে ধরতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে প্রতিটা বুথের সর্বচ্চ ১ হাজার ২০০ জন ভোটার একটা বুথে রাখা যাবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বুথের সংখ্যা ইতিমধ্যেই বেড়েছে। সেই সংখ্যাটাও সিইওদেরকে তুলে ধরতে হবে। এর পাশাপাশি জেলা নির্বাচনী আধিকারিক, ইআরও, এইআরও এবং বিএলওদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের কী পরিস্থিতি, তা-ও পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে জানাবেন। রাজ‍্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সিইওরা নিজের মতামতও জানাবেন।

আসছে বছর বিধানসভা নির্বাচন। বাঙালি অস্মিতা এবং বাংলা ভাষার ওপর ‘আক্রমণের’ অভিযোগ তুলে মাঠে নেমে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এসআইয়ের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এসআইআরের মাধ্যমে ‘বাঙালি’ ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি, এমনও অভিযোগ করেছেন তিনি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “এই রাজ‍্যে এসআইআর করা হবে না। আমরা এসআইআর করতে দেব না।”

পাল্টা আক্রমণ করেছে বিজেপিও। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এসআইআরের দাবিতে অনড় রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের মুসলমানদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। ওটার তৃণমূলের ভোটব‍্যাঙ্ক।” শুভেন্দুর কথায়, এসআইআরের পরে তৃণমূলের ভোটার অর্ধেক হয়ে যাবে। তাই বাংলাদেশ মুসলমান, ডবলএন্ট্রি ভোটার, মৃত ভোটার বাদ দেওয়া জরুরি বলে দাবি করছেন তিনি।


Share