Bangla Awas Yojna

আবাস যোজনার টাকা ঢুকলেও তৈরি হয়নি বাড়ি, তিন লক্ষের মধ্যে দু’লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে

অন্যদিকে, এই ধরনের ঘটনা একাধিক উপভোক্তার সঙ্গে ঘটেছে বলে জানিয়েছে বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাতো। তিনি বলেন, "পুরসভা কখনও কোন ঠিকাদার ঠিক করে দেয় না। উপভোক্তাকে টাকা দেওয়া হয়, তিনি নিজের মতন কাজ করেন।

আগাছায়
নিজস্ব সংবাদদাতা, শ্রীরামপুর
  • শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪৭

বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা ঢুকেছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাড়ি তৈরি হয়নি। বাড়ি তৈরির কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে। সমগ্র ভিতটিকে গ্রাস করে নিয়েছে আগাছা ও জঙ্গল। এমনই বেহাল দশা বৈদ্যবাটি পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নানু চক্রবর্তীর বাড়ির। অভিযোগ, সরকারি বাড়ি তৈরি টাকা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুরসভার ঠিক করে দেওয়া ঠিকাদার সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন! বর্তমানে তিনি একটি ভাড়া বাড়িতে দিন কাটাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন।

জানা গিয়েছে, হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ নগর এলাকার বাসিন্দা নানু চক্রবর্তী ২০২২ সালে আবাস যোজনার টাকা তার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। তখন এলাকারই এক তৃণমূল নেতা তাঁকে এক ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার সন্দীপ মিশ্র ওরফে শানুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। অভিযোগ, সেই ঠিকাদার বাড়ির শুধু ভিতটুকু তৈরি করে দু’লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

অসহায় বৃদ্ধা জানিয়েছেন, বারবার তৃণমূল সেই নেতার দরবার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। বাড়ি তৈরির টাকা হিসেবে ধাপে ধাপে মোট তিন লক্ষ টাকা তার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল। তার মধ্যে থেকে দু’লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ঠিকাদার নিয়ে নেওয়ায় মাথায় বাজ পড়ে বৃদ্ধার। অন্যদিকে, ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ি তৈরি না হলে, পুরসভার তরফ থেকে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফলে রাতের ঘুম উড়েছে নানু চক্রবর্তীর। তাঁর কথায়, তিনি লোকের বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন। নিজের জায়গা থাকতেও এতদিন ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। সেই ভাড়া মেটাতেই তাঁকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। সংসারে এক মেয়ে ছাড়া তার কেউ নেই। তিন লক্ষ টাকা পুরসভাকে কীভাবে দেবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই বৃদ্ধা।

ঘটনাকে ঘিরে বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপি নেতা হরি মিশ্র বলেন, "উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তিনি জানতেন না। কাউন্সিলর বলেছে টাকা এসেছে খোঁজ করুন। কাউন্সিলর ঠিকাদারকে ঠিক করে দিয়েছিল। সেই ঠিকাদারই টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।"

অন্যদিকে, এই ধরনের ঘটনা একাধিক উপভোক্তার সঙ্গে ঘটেছে বলে জানিয়েছে বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাতো। তিনি বলেন, "পুরসভা কখনও কোন ঠিকাদার ঠিক করে দেয় না। উপভোক্তাকে টাকা দেওয়া হয়, তিনি নিজের মতন কাজ করেন। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পুরসভার কিছু করার নেই। ওই মহিলাকে টাকা দেওয়া হয়েছিল উনি বাড়ি তৈরি করতে পারেননি। পুরসভা ওনার সঙ্গে যা বোঝার বুঝে নেবে।" অন্যদিকে, নানু চক্রবর্তী সন্দীপ মিশ্রর বিরুদ্ধে শ্রীরামপুর থানার শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানা গিয়েছে।


Share