A School Teacher Had Been Arrested In Alleged Betting Case

সরকারি স্কুলের শিক্ষকের বাড়িতে টাকার পাহাড়! অবৈধ বেটিংচক্র চালানোর অভিযোগে গ‍্যাংটক থেকে গ্রেফতার দু’জন, গঙ্গারামপুরের ঘটনা

রবিরার বিকেলে অপূর্ব সরকার এবং কুনাল দাসকে গ‍্যাংটক থেকে গঙ্গারামপুরে নিয়ে আসা হয়। এর পরে ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। আসেন গঙ্গারামপুরের এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য।

বিজ্ঞানের শিক্ষকের বাড়িতে উদ্ধার বিপুল পরিমাণে নগদ টাকা।
নিজস্ব সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর
  • শেষ আপডেট:১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫৪

পেশায় রাজ‍্য সরকারি স্কুলের শিক্ষক। সেই শিক্ষকের বাড়ি থেকে মিলল কোটি টাকা বেশি নগদ। অভিযোগ, ওই শিক্ষক অবৈধ বেটিংচক্র চালাতেন। শিক্ষকের নাম অপূর্ব সরকার। তাঁকে গ‍্যাংটক থেকে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এর সঙ্গে তাঁর এক সঙ্গীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বেটিংচক্রের মামলায় এই নিয়ে মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরে অবৈধ বেচিংচক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ। সেই মামলার তদন্তে ওই চক্রের অন্যতম পাণ্ডা পিন্টু ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, পিন্টু ঘোষের থেকে অপূর্ব সরকার এবং কুনাল দাসের খোঁজ মেলে। এর পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অপূর্ব সরকার এবং কুনাল দাস গ‍্যাংটকে গা ঢাকা দিয়ে লুকিয়ে আছে। সেখানে একটি পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এবং তাঁদেরকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়।

রবিরার বিকেলে অপূর্ব সরকার এবং কুনাল দাসকে গ‍্যাংটক থেকে গঙ্গারামপুরে নিয়ে আসা হয়। এর পরে ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। আসেন গঙ্গারামপুরের এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য। বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পৌঁছোয়। রবিরার সন্ধ্যায় বালুরঘাটের রঘুনাথপুরে অপূর্বের শশুড় বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, ওই বাড়ি একটি খাটের ভিতর থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ঠাকুরঘরের একটি বাক্স থেকে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে শ্বশুরবাড়ির খাট ও ঠাকুরঘর থেকে এক কোটি ১৭ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা পুলিশ উদ্ধার করে। এর পাশাপাশি গঙ্গারামপুরের কায়স্থ পাড়ায় অপূর্বের বাড়ি থেকে ১৭ লক্ষ টাকা পুলিশ উদ্ধার করেছে। অর্থাৎ উদ্ধারকৃত মোট টাকার পরিমান এক কোটি ৩৪ লক্ষ ৯৭ টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, অপূর্ব গঙ্গারামপুরের নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক। তিনি পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত অঙ্ক, ভৌত বিজ্ঞানের ক্লাস নিতেন। শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের মধ্যে বেশ নামডাকও ছিল। কিন্তু অভিযোগ, শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি অবৈধ বেটিংচক্রের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরে জড়িয়ে পড়েন। সেই চক্রের আয়ে অপূর্ব রীতিমত ফুলেফেঁপে ওঠে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

নয়াবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন জানান, ”কোনও কিছু না জানিয়েই অপূর্ব সরকার গত ২৭ অগস্ট থেকে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। পরবর্তীতে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ এসে শিক্ষক অপূর্ব সরকার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে যান। এর পরই তাঁরা জানতে পারেন কোনও ধরনের অবৈধ লটারির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অপূর্ব সরকার।” প্রধান শিক্ষক আরও জানান, ”শনিবার পুলিশের তরফে ফোন করে জানানো হয় অপূর্ব সরকার গ্রেফতার হয়েছেন। সেই কারণে, তাঁর যাবতীয় লিভ যাতে মঞ্জুর না করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।”

গঙ্গারামপুরের এসডিপিও দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ”এর আগেই অবৈধ লটারি কারবারে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকেই অপূর্ব এবং কুণালের নাম জানা যায়। তাঁর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকাও উদ্ধার হয়েছে।” রবিবার ধৃতকে গঙ্গারামপুর মহাকুমা আদালতে পেশ করা। তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এ দিন আদালতে যাওয়ার পথে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন অপূর্ব সরকার।


Share