Suicide

বন্ধুর সাথে অবৈধ সম্পর্কে বিয়ে স্ত্রীর, দাম্পত্যে বিশ্বাসঘাতকতার জেরে আত্মঘাতী স্বামী

বন্ধুকে বিয়ে করে স্ত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ায় মানসিক চাপে আত্মঘাতী এক যুবক।প্রেম করে বিয়ে করা স্ত্রী নিজ বন্ধুকেই বিয়ে করে আত্মহত্যা করেন চিরঞ্জিত।

প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কালনা
  • শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৫:১৪

বন্ধু সেজে পিঠে চুরি! বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বন্ধুকে বিয়ে করেছে স্ত্রী। সেই মানসিক আঘাত সহ্য করতে পারেননি স্বামী। তিনি সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে তাঁর পরিবার তাঁকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশ এসে মৃতের দেহ উদ্ধার করেন। মৃতের নাম চিরঞ্জিত দেবনাথ(৩১)। বাড়ি নাদনঘাট থানার চাঁদপুর এলাকায়। মঙ্গলবার কালনা মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে ভালোবেসে নবদ্বীপের এক তরুণীকে বিয়ে করেন চিরঞ্জিত দেবনাথ। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ছিলেন চিরঞ্জিত। প্রায় চার বছর আগে কর্মসূত্রে পরিচয় হয় কৃষ্ণনগরের এক যুবকের সঙ্গে। একই পেশায় যুক্ত থাকায় সময়ের সঙ্গে বন্ধুত্বও গাঢ় হতে থাকে। চিরঞ্জিতের পারিবারিক অনুষ্ঠানে ওই বন্ধুকে নিয়মিত দেখা যেত। স্বামীর মাধ্যমেই বন্ধুর সঙ্গে স্ত্রীর পরিচয়। সেই সম্পর্কই পরে সংকট ডেকে আনে। কিন্তু সেই বন্ধুত্বের আড়ালে যে অন্য সম্পর্ক গড়ে উঠছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি চিরঞ্জিত। পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার বাপেরবাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তাঁর স্ত্রী। পরদিন হঠাৎই চিরঞ্জিতের মোবাইলে আসে এক ছবি। দেখা যায়—স্ত্রী সিঁদুর পরছেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর হাত থেকে। হোয়াটস অ্যাপ-এ পাঠানো ছবিটি দেখেই ভেঙে পড়েন চিরঞ্জিত দেবনাথ।

ঘটনার পর মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন চিরঞ্জিত দেবনাথ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে তিনি কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন। বন্ধুরা তাঁকে নিজেকে সামলানোর পরামর্শও দেন। চিরঞ্জিত জানান, স্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত নেবেন—কখনও ভাবতেও পারেননি। সন্ধ্যায় বন্ধুদের নিয়ে তিনি এক আইনজীবীর দ্বারস্থ হন। তাঁর থেকে বিবাহবিচ্ছেদ করার জন্য পরামর্শ নেন। রাতে বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমোতে যান চিরঞ্জিত। তবে ভোরে পরিবারের লোকজন দেখেন ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে মৃত্যুর জন্য স্ত্রী ও বন্ধুকেই দায়ী করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

মৃতের বাবা ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ জানান, ওই যুবককে ছেলের ভালো বন্ধু হিসেবেই জানতেন তাঁরা। প্রায়ই সপরিবারে যাতায়াত ছিল। কিন্তু বন্ধুত্বের আড়ালে ছেলে ও বউমার জীবনে এমন সম্পর্ক গড়ে উঠছে, তা কেউই বুঝতে পারেননি। দীর্ঘ প্রেমের পর তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। সংসারও ভালোই চলছিল। বাবার দাবি, স্ত্রীর এই বিশ্বাসঘাতকতা মেনে নিতে না পেরে চিরঞ্জিত চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


Share