Special Intensive Rivision

কালিয়াচকে এসআইআর আতঙ্কে তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু, নির্বাচন কমিশনের গাফিলতির অভিযোগ

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বাবার নামের ত্রুটিকে ঘিরে এসআইআর আতঙ্কে কালিয়াচক–৩ ব্লকে তৃণমূল কর্মী বরকত শেখের মৃত্যুর অভিযোগ। কমিশনের গাফিলতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ।

এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর
নিজস্ব সংবাদদাতা, কালিয়াচক
  • শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:২৮

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বাবার নাম সংক্রান্ত তথ্যগত ত্রুটিকে কেন্দ্র করে তীব্র এসআইআর আতঙ্কে ফের এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। মৃত কর্মীর নাম বরকত শেখ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালিয়াচক–৩ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস চত্বর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূল নেতৃত্ব ও মৃতের পরিবারের দাবি, এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয় নির্বাচন কমিশনের গাফিলতির ফল।

চকসেহেরদি গ্রামের বাসিন্দা বরকত শেখ তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ লেভেল এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। পরিবারের অভিযোগ, বরকতের বাবার নাম রশুল শেখ হলেও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বাবার নামের জায়গায় শুধু ‘শেখ’ লেখা ছিল। এই ভুল নজরে আসতেই বরকত প্রবল মানসিক চাপে ভুগতে শুরু করেন।

বরকতের আত্মীয় সামাউন শেখ জানান, ওয়েবসাইটে নামের ভুল দেখেই বরকত ভয় পেয়ে যান। তাঁর আশঙ্কা ছিল, এর জেরে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তে পারে। বিষয়টির সমাধান চেয়ে শুক্রবার তিনি কালিয়াচক–৩ নম্বর ব্লক বিডিও অফিসে যান। কিন্তু সেখান থেকে স্পষ্ট কোনো আশ্বাস না পেয়ে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অফিস থেকে বেরোনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন।

শুক্রবার সন্ধ্যা প্রায় ৭টা নাগাদ বিডিও অফিসের বাইরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বরকত শেখ। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতাল চত্বরে তৃণমূল কর্মীদের ভিড় ও বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক চন্দনা সরকার। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রশ্ন তুলে তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের মারাত্মক ভুলে বারবার মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছেন। বরকত শেখও সেই আতঙ্কেই প্রাণ হারাল। বিডিও অফিসে গিয়েও তাঁকে নিশ্চিত করা হয়নি যে তাঁর নাম থাকবে। ভোটের আগে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর দায় নির্বাচন কমিশনেরই।

গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সামিউল শেখ জানান, নির্বাচনের আগে নামের সামান্য ত্রুটির কারণে মানুষ চরম আতঙ্কে ভুগছেন। বরকত তাদের দলের নিষ্ঠাবান কর্মী ছিল। সামান্য একটি ভুলের জন্য সে বিডিও অফিসে গিয়ে কোনও সুরাহা পায়নি তিনি, আর তার ফল হল এই মর্মান্তিক মৃত্যু।

এ বিষয়ে কালিয়াচক–৩ নম্বর ব্লকের বিডিও সুকান্ত শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।


Share