CM Wrote A Letter To Prime Minister Regarding Gorkhaland Issue

রাজ‍্যকে না জানিয়ে পাহাড়ে ‘মধ‍্যস্থতাকারী’ নিয়োগ! ‘স্থায়ী সমাধান ত্রিপাক্ষিক বিষয়’, জিটিএ’র চুক্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রী মমতার

রাজস্থান ক্যাডারের ওই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা প্রাক্তন সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সীমান্ত নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞও তিনি। দার্জিলিং পাহাড় এবং তরাই-ডুয়ার্স এলাকার মানুষের যে সব সমস্যাগুলি এত দিন ধরে সমাধান হয়নি, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। ত্রিপাক্ষিক আলোচনার কাজে মধ‍্যস্থতার দায়িত্বও পালন করবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:০৮

পাহাড়ে স্থায়ী সমাধানের উদ্দেশ্যে ‘মধ‍্যস্থতাকারী’ নিয়োগ করেছে কেন্দ্র সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলে এই নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর দাবি, পাহাড়ে স্থায়ী সমাধান ত্রিপাক্ষিক বিষয়। শনিবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দার্জিলিং এবং লাগোয়া তরাই-ডুয়ার্স এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার পঙ্কজকুমার সিংহকে শুক্রবার ‘মধ্যস্থতাকারী’ হিসেবে নিয়োগ করেছে দিল্লি। মমতার অভিযোগ, এই নিয়োগের জন‍্য রাজ‍্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। আর গোটাটাই রাজ‍্যকে অন্ধকারে রেখে পদক্ষেপ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “গোর্খা সম্প্রদায় এবং জিটিএ’র বিষয়ে নিয়ে আলোচনার জন্য পঙ্কজকুমার সিংহকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করা হয়নি।” রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে তিনি বিস্মিত এবং ব্যথিত বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, গোর্খা সম্প্রদায় এবং ওই এলাকা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসার আগে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা কেন্দ্রকে করতে হবে। তার কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ওই এলাকায় অনেক কষ্টে শান্তি ফেরানো সম্ভব হয়েছে। তাই একতরফা কোনও পদক্ষেপ ওই সংবেদনশীল অঞ্চলের শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তাঁর দাবি, “কেন্দ্রের একতরফা পদক্ষেপ সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। সেই কারণে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে তা প্রত্যাহার করা হোক।“

রাজস্থান ক্যাডারের এই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা প্রাক্তন সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সীমান্ত নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞও তিনি। দার্জিলিং পাহাড় এবং তরাই-ডুয়ার্স এলাকার মানুষের যে সব সমস্যা গুলি এত দিন ধরে সমাধান হয়নি তিনি তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। মমতার দাবি, জিটিএ’র আওতায় থাকা দার্জিলিং পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স এলাকার আইনশৃঙ্খলা এবং শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব রাজ্যের। সেখানকার স্থায়ী সমাধানও ত্রিপাক্ষিক বিষয়। সেই মর্মে ২০১১ সালে ১৮ জুলাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, রাজ্য সরকার এবং জিটিএ’র মধ্যে যে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা-ও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির পাল্টা মন্তব্য করেছে রাজ‍্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ‍্যমন্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে শুভেন্দু বলেন, “কেন্দ্র আইন মেনেই পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ পাহাড় এখনও হাসছে না। জিটিএ-তে দুর্নীতি হয়েছে। জিটিএ-তে কোনও কাজ হয় না। জিটিএ-তে নির্বাচনও হয় না।” তাঁর দাবি, যাঁকে মধ‍্যস্থতাকারী হিসেবে পাঠিয়েছে, তিনি জিটিএ, রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা করুন। বিরোধী দলনেতা আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর জন‍্য সংবিধান পরিবর্তন হয় না। হবেও না। সংবিধান সবার ওপরে।”


Share