ISI Chief Sentenced

দেশের গোপন তথ্য পাচার-সহ একাধিক অভিযোগ! ইমরান খান ঘনিষ্ঠ পাকিস্তানের প্রাক্তন আইএসআই প্রধানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিল সামরিক আদালত

পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোয় আইএসআই প্রধানের পদটিকে দ্বিতীয় সর্বাধিক ক্ষমতাশালী পদ হিসেবে ধরা হয়। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১২ অগস্ট মামলাটি শুরু হয়েছিল। ১৫ মাস ধরে চলে মামলাটি। বিচারপ্রক্রিয়া সামরিক আদালতে বন্ধ দরজার আড়ালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই মামলার সুনির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।

পাকিস্তানের প্রাক্তন আইএসআই প্রধান ফৈয়াজ হামিদ।
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিল্লি
দিল্লি
  • শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৩৬

পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রাক্তন প্রধান ফৈয়াজ হামিদকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস, রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

পাকিস্তানের প্রাক্তন আইএসআই প্রধান ফৈয়াজ হামিদের বিরুদ্ধে মূলত চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার করেছেন যাতে দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত হয়ে ছিলেন বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়াও, নিজের পদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি সম্পদ নয়ছয় করেছেন যাতে নাগরিকদের ক্ষতি হয়েছে।

ফৈয়াজ হামিদ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান ছিলেন কর্মরত ছিলেন। সেই সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইমরান খান। ফৈয়াজ হামিদ ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২২ সালে পাকিস্তানের সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর স্বেচ্ছায় অবসর নেন তিনি।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দফতর (আইএসপিআর) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফৈয়াজ হামিদকে তাঁর পছন্দের আইনজীবী নিয়োগ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারবেন। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফৈয়াজ হামিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগ পৃথকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, এই মামলাটি ২০২৩ সালের ৯মে ইমরান খানের গ্রেফতারির পর পাকিস্তানে যে বিক্ষোভে হয়েছিল, তার মধ্যে ফৈয়াজের নাম জড়িয়েছে।

পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোয় আইএসআই প্রধানের পদটিকে দ্বিতীয় সর্বাধিক ক্ষমতাশালী পদ হিসেবে ধরা হয়। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১২ অগস্ট মামলাটি শুরু হয়েছিল। ১৫ মাস ধরে চলে মামলাটি। বিচারপ্রক্রিয়া সামরিক আদালতে বন্ধ দরজার আড়ালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই মামলার সুনির্দিষ্ট বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।

হামিদের আইনজীবী মিঁয়া আলি আশফাক বলেন, তাঁর মক্কেল “১ হাজার শতাংশ নির্দোষ। কিন্তু এটাই আদালতের সিদ্ধান্ত।”সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “আমরা রায় সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। শুধু আইএসপিআর-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমেই জানতে পারি। আমরা এখন রায়ের প্রতিলিপি পাওয়ার জন্য আবেদন করছি। প্রতিলিপি পেলে তা পর্যালোচনা করব।” তাঁর আইনজীবী এ-ও জানিয়েছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন। বলেন, “প্রথম আবেদনের ফোরাম হলো সেনাপ্রধান। তাই আমরা সেটাই করব। আমরা আশাবাদী যে পরবর্তী ফোরামে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরে ন্যায়বিচার পাব।” এটাই প্রথমবার যে পাকিস্তানে কোনও আইএসআই প্রধানকে সামরিক আদালতে বিচার করা হল।


Share