Sydney Terror Attack

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি সমুদ্র সৈকতে গুলিকান্ডে অভিযুক্ত ইসলামিক জঙ্গি সাজিদের হায়দরাবাদ যোগ! গত ২৭ বছরে মাত্র ছ’বার ভারতে আসা, গিয়েছিল ফিলিপিন্সেও

ফিলিপিন্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া থেরেসা লাজারো ও তার অস্ট্রেলিয়ান সমকক্ষ পেনি ওয়ং বন্ডাই সৈকতে হামলার তদন্ত সংক্রান্ত যে কোনও অগ্রগতির বিষয়ে “ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরকে অবহিত রাখার” বিষয়ে একমত হয়েছেন। এবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অতীতে নাভেদ আক্রমকে সিডনিভিত্তিক ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনে আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে তদন্ত করা হয়েছিল।

ইসলামিক জঙ্গি সাজিদ আক্রম এবং নাভেদ আক্রম।
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিল্লি
দিল্লি
  • শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৩৬

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ইসলামিক জঙ্গি সাজিদের হায়দরাবাদ যোগ! তবে ১৯৯৮ সালেই দেশ ছেড়ে চলে যায়। গত ২৭ বছরে মাত্র ছ’বার হায়দরাবাদে এসেছিল ইসলামিক জঙ্গি সাজিদ আক্রম। তবে দেশ ছাড়ার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না বলে জানিয়েছে তেলেঙ্গানা পুলিশ।

গত রবিবার দুপুরে সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের হনুক্কাহ্ নামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় ইসলামিক জঙ্গি সাজিদ আক্রম এবং তার ছেলে নাভেদ আক্রম ১০ মিনিট তান্ডব চালায়। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ইহুদিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। প্রাণ যায় ১৬ জন নিরীহ মানুষের। পুলিশের পাল্টা এনকাউন্টারে সাজিদ নিকেশ হয়। নাভেদ গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাজিদ এবং নাভেদ প্রথমে জানা গিয়েছিল তারা পাকিস্তানের নাগরিক। পরে জানা গিয়েছে তারা আদতে হায়দরাবাদের বাসিন্দা। তবে ১৯৯৮ সালে কাজের সন্ধানে অস্ট্রেলিয়া চলে যায় সাজিদ। হায়দরাবাদের এক পুলিশকর্তার কথায়, তার পর ছ’বার ভারতে এসেছিল সাজিদ। তার মৃত বাবার সম্পত্তি বিষয়ে মূলত এসেছিল এদেশে। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েও সাজিদ আসেনি। হায়দরাবাদে থাকা পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ বা সম্পর্ক ছিল না তার। ওই পুলিশকর্তার কথায়, সাজিদ এবং তার ছেলে নাভেদ অস্ট্রেলিয়ায় কী কাজ করত, তা তারা জানেন না।

কর্মকর্তা আরও জানান, সাজিদের জন্ম ভারতেই। সেখানকার একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিল। এর পরে কাজের সন্ধানে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। পরে অস্ট্রেলিয়ায় থাকাকালীন ভেনেরা গ্রোসো নামে ইতালিয় মহিলাকে বিয়ে করেন। ওই মহিলা খ্রিস্টান হওয়ায় তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন সাজিদ। তার সন্তান অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করায়, সে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তেলঙ্গানা পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সংস্থা বা তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত।

পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছুদিন আগে সাজিদ এবং তার ছেলে নাভেদ আক্রম ফিলিপিন্সে গিয়েছিল। তার জন্য সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ নভেম্বর ফিলিপিন্সে যায় তারা। ২৮ নভেম্বর দেশ ছাড়ে। বাবা-ছেলে জঙ্গি হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে ফিলিপিন্সে কেন গিয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে

অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (এবিসি) নিরাপত্তা বিভাগের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ফিলিপিন্সে তারা “সামরিক ধাঁচের প্রশিক্ষণ” নিতে গিয়েছিলেন। তবে তবে অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা এখনও সেই তথ্য নিশ্চিত করতে পারেননি।

ফিলিপিন্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া থেরেসা লাজারো ও তার অস্ট্রেলিয়ান সমকক্ষ পেনি ওয়ং বন্ডাই সৈকতে হামলার তদন্ত সংক্রান্ত যে কোনও অগ্রগতির বিষয়ে “ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরকে অবহিত রাখার” বিষয়ে একমত হয়েছেন। এবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অতীতে নাভেদ আক্রমকে সিডনিভিত্তিক ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনে আইএস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে তদন্ত করা হয়েছিল।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ্ জানান, নাভিদ আক্রম ২০১৯ সালে প্রথম তদন্তকারীদের নজরে আসেন “অন্যদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ভিত্তিতে”। তবে সে সময় মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, তার কাছ থেকে “চলমান কোনো হুমকি বা হিংসায় জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।”


Share