Bangladesh Turmoil

বাংলাদেশে সংখ‍্যালঘুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত! ভালুকায় যুবককে পিটিয়ে খুন, গাছে ঝুলিয়ে ধরিয়ে দেওয়া হল আগুন

ভালুকা থানার ডিউটি অফিসার রিপন মিঁয়া জানান, ধর্মী নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে একদল লোক তাঁর ওপর হামলা চালায়। রিপন আরও বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৯টার দিকে উত্তেজিত জনতা তাকে ধরে ফেলে। তারা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মৃতদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়।”

তছনছ করে দেওয়া হয়েছে সংবাদপত্রের অফিস।
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিল্লি
দিল্লি
  • শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:৪৩

অরাজকতা-অরাজকতা-অরাজকতা। সংখ্যালঘুদের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত বাংলাদেশে। সিঙ্গাপুরে ওসমান হাদির মৃত্যুতে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে বাংলাদেশ। সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি বাংলা’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সংখ‍্যালঘু যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসলামিক সংগঠনের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে।

মৃত যুবকের নাম দীপুচন্দ্র দাস। বয়স ৩০ বছর। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীপু স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকার ডুবালিয়া পাড়া মহল্লায়। ওই এলাকায় ভাড়া থাকতেন। ওই এলাকার একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করতেন।

তাঁর বিরুদ্ধে ইসলামিক উন্মত্ত জনতা ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগ এনে মারধর করা হয়। গণপিটুনিতে প্রাণ হারান তিনি। এর পরেই তাঁর গলায় দড়ি দিয়ে একটি গাছে ঝোলানো হয়। তারপর মৃতদেহে অগ্নিসংযোগ করে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই, এমন নৃশংসতার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদমাধ্যম ‘অপ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীপুর মৃতদেহে অগ্নিসংযোগ করার পরে উন্মত্ত জনতা ইসলাম ধর্মের স্লোগান দিচ্ছে। তাঁকে উদ্ধার করা তো দুরস্থ, মারধর আর অগ্নিসংযোগের ভিডিয়ো করছে তারা।

ঘটনার বিষয়টি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনো মামলা দায়ের করেনি। সেই দেশে অরাজকতার প্রমাণ আর কী হতে পারে। ভালুকা থানার ডিউটি অফিসার রিপন মিঁয়া জানান, ধর্মী নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে একদল লোক তাঁর ওপর হামলা চালায়। রিপন আরও বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৯টার দিকে উত্তেজিত জনতা তাকে ধরে ফেলে। তারা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মৃতদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়।”

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দীপুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। রিপন মিঁয়া বলেন, “আমরা তার আত্মীয়দের খোঁজ করার চেষ্টা করছি। মামলা দায়ের হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফের বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে ইসলামিক সংগঠনের সদস্যেরা। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের মুজিবের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি চট্টগ্রামে ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসে হামলার চেষ্টা করেছে আন্দোলনকারী ইসলামিক সংগঠনের সদস্যেরা। পরপর অফিস লক্ষ্য করে ইঁট ছোঁড়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে রাজশাহীর মুজিবের আরেকটি বাড়ি এবং আওয়ামি লিগের অফিস।

অন‍্যদিকে, খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলিও করে হত্যা করেছে ইসলামিক সংগঠনের সদস্যেরা। বাংলাদেশের বহু জায়গাতেই ইসলামিক বিক্ষোভকারীদের মুখে ছিল শেখ হাসিনা এবং ভারত-বিরোধী স্লোগান। রাত থেকে উপদূতাবাসের সামনে অবস্থানে বসেছেন ইসলামিক সংগঠনের ছাত্র-যুবদের একাংশ। পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর কার্যত দর্শকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ।


Share