Bangladesh Turmoil

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ মহম্মদ ইউনূস! রাতভোর ধ্বংসলীলার পরে অবশেষে দুই সংবাদমাধ্যমের কর্তাকে ফোন, কী বার্তা দিলেন?

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিল ইসলামি সংগঠনের নেতা শরিফ ওসমান হাদি। সরকারি উদ্যোগে তাঁকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাথায় গুলি লাগায় হাদির শারীরিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছিল। গতকাল সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

জ্বলছে বাংলাদেশ।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:২৭

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে কার্যত ব্যর্থ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। রাতভর বিনা বাধায় চলে ভাঙচুর, লুঠপাট এবং অগ্নিসংযোগ। বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ‍্য ডেইলি স্টার’ এর অফিসের ঘটনার পরে কর্তৃপক্ষকে ফোন করলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। তাঁর দাবি, তিনি ঘটনার পরেই সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছেন। পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।

শুক্রবার সকালে ইউনূসের প্রেস উইং থেকে বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে। ইউনূসের দফতরের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রথম আলো-র সম্পাদক মতিউর রহমান এবং ডেলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদকর্মীদের উপর হামলাকে ন্যক্কারজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন।

ইউনূসের দাবি, এমন ঘটনা তাকে গভীর ভাবে ব্যথিত করেছে। জানান, এই দুঃসময়ে সরকার তাদের পাশে আছে। শুধু তা-ই নয়, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাকে ‘স্বাধীন গণমাধ্যমের উপর হামলার শামিল’ বলেও উল্লেখ করেছেন ইউনূস। তাঁর মতে, এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রগতি এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাপ্রাপ্ত হবে।

দু’টি সংবাদপত্রকেই পূর্ণ নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সম্পাদকদের সঙ্গেও ইউনূস দেখা করবেন। হিংসার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। 

প্রত‍্যক্ষদর্শীদের কথায়, বৃহস্পতিবার রাতে যখন ইসলামিক সংগঠনের সদস্যেরা যখন তান্ডব চালাচ্ছিল তখন, কার্যত দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ। তাঁদের মতে, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে লাভ কী! ইউনূসের দফতর থেকেবলা হয়েছে, ‘‘যাঁরা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি করে এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে, তাঁদের জন্য অগ্রগতিকে ব্যাহত হতে দেওয়া যাবে না।’’ এ ছাড়াও, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঘটা যাবতীয় ঘটনাকে ‘উগ্র গোষ্ঠী দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা’ বলেছে ইউনূসের দফতর।

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিল ইসলামি সংগঠনের নেতা শরিফ ওসমান হাদি। সরকারি উদ্যোগে তাঁকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাথায় গুলি লাগায় হাদির শারীরিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছিল। গতকাল সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। 

এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর বৃহস্পতিবার রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন ইউনূস। দেশবাসীকে সংযত থাকার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আবেদন কার্যত অগ্রাহ্য করে রাতেই নানা প্রান্তে শুরু হয় ইসলামিক চরমপন্থীদের তান্ডব, ভাঙচুর, লুঠপাট এবং অগ্নিসংযোগ। চট্টগ্রামে ভারতীয় উপদূতাবাসে হামলা চালানো হয়। রাতভর তার সামনে অবস্থানেও বসেছিলেন ছাত্রযুবদের একাংশ। এ ছাড়া, ধানমন্ডিতে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানট ভবনে ভাঙচুর চালানো এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি। 

সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’-র চারতলা ভবন ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ডেলি স্টার-এর দফতরেও দু’টি তলা ক্ষতিগ্রস্ত। সাংবাদিকেরা ভিতরে থাকা অবস্থাতেই ভবনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে পুলিশ ও দমকল তাঁদের উদ্ধার করে।


Share