Sydney Terror Attack

‘ভারত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না,’ সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইসলামি জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা জানিয়ে স্পষ্ট বার্তা জয়শঙ্করের, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ

বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, “সন্ত্রাসবাদকে ভারত কোনও ভাবেই সমর্থন করে না। এ বিষয়ে ভারত ও ইজরায়েল, দুই দেশই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলে। বন্ডি সমুদ্র সৈকতে হনুক্কাহ্ উৎসব চলাকালীন যে জঙ্গি হানা হয়েছে, তা নিয়ে ভারত গভীর ভাবে শোকাহত। এই হামলার নিন্দা জানাই।”

(বাঁ দিকে) বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং (ডান দিকে) ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
নিজস্ব সংবাদদাতা, সিডনি
সিডনি
  • শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০২:০৮

ভারত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। স্পষ্ট বার্তা দিলেন দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গত রবিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত সাজিদ আক্রম হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা, এমন খবর সামনে এসেছে। ঘটনাচক্রে সেই দিনই ইজরায়েলে পৌঁছেছেন দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের ওপর গুলি চালিয়ে হত‍্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বর্তমানে দু’দিনের সফরে ইজরায়েলে রয়েছেন। জেরুসালেমে ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী গিদন মোশে সারের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, “সন্ত্রাসবাদকে ভারত কোনও ভাবেই সমর্থন করে না। এ বিষয়ে ভারত ও ইজরায়েল, দুই দেশই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলে। বন্ডি সমুদ্র সৈকতে হনুক্কাহ্ উৎসব চলাকালীন যে জঙ্গি হানা হয়েছে, তা নিয়ে ভারত গভীর ভাবে শোকাহত। এই হামলার নিন্দা জানাই।” এর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের পাশে থাকার জন্য ইজরায়েলের ধন্যবাদও জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

জয়শঙ্কর আরও জানিয়েছেন, ইজরায়েল সফরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, শীঘ্রই ভারতে আসতে পারেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। সেখানেই ইজরায়েলের রাষ্ট্রনেতা জানিয়েছেন, ‘খুব শীঘ্রই’ দেখা করবেন তাঁরা। তার আগেই সে দেশে সফর করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। দু’দিনের সফরে ইজরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগ এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার দুপুরে সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের হনুক্কাহ্ নামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় ইসলামিক জঙ্গি সাজিদ আক্রম এবং তার ছেলে নাভেদ আক্রম ১০ মিনিট তান্ডব চালায়। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা ইহুদিদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। প্রাণ যায় ১৬ জন নিরীহ মানুষের। পুলিশের পাল্টা এনকাউন্টারে সাজিদ নিকেশ হয়। নাভেদ গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাজিদ এবং নাভেদ প্রথমে জানা গিয়েছিল তারা পাকিস্তানের নাগরিক। পরে জানা গিয়েছে তারা আদতে হায়দরাবাদের বাসিন্দা। তবে ১৯৯৮ সালে কাজের সন্ধানে অস্ট্রেলিয়া চলে যায় সাজিদ। হায়দরাবাদের এক পুলিশকর্তার কথায়, তার পর ছ’বার ভারতে এসেছিল সাজিদ। তার মৃত বাবার সম্পত্তি বিষয়ে মূলত এসেছিল এদেশে। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েও সাজিদ আসেনি। হায়দরাবাদে থাকা পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ বা সম্পর্ক ছিল না তার। ওই পুলিশকর্তার কথায়, সাজিদ এবং তার ছেলে নাভেদ অস্ট্রেলিয়ায় কী কাজ করত, তা তারা জানেন না।

কর্মকর্তা আরও জানান, সাজিদের জন্ম ভারতেই। সেখানকার একটি কলেজ থেকে ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিল। এর পরে কাজের সন্ধানে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। পরে অস্ট্রেলিয়ায় থাকাকালীন ভেনেরা গ্রোসো নামে ইতালিয় মহিলাকে বিয়ে করেন। ওই মহিলা খ্রিস্টান হওয়ায় তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন সাজিদ। তার সন্তান অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করায়, সে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। তেলঙ্গানা পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সংস্থা বা তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত।

পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছুদিন আগে সাজিদ এবং তার ছেলে নাভেদ আক্রম ফিলিপিন্সে গিয়েছিল। তার জন্য সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ নভেম্বর ফিলিপিন্সে যায় তারা। ২৮ নভেম্বর দেশ ছাড়ে। বাবা-ছেলে জঙ্গি হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে ফিলিপিন্সে কেন গিয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। 


Share