Illegal Baby Transfer Uncovered

তৃতীয় কন্যা জন্মের পর গোপনে হস্তান্তর, দাসপুরে যৌথ অভিযানে উদ্ধার ১২ দিনের নবজাতক

জন্মের ১২ দিনের মাথায় বেআইনি দত্তকের অভিযোগে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থেকে উদ্ধার নবজাতক কন্যা। যৌথ অভিযানে পুলিশ–প্রশাসন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর শিশুটি ‘সা’ হোমে।

প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর
  • শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০২:৩৭

জন্মের পরেই নিয়মবহির্ভূত ভাবে এক দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল নবজাতক কন্যাসন্তানকে। মঙ্গলবার বিকেলে মাত্র ১২ দিনের সেই শিশুকে উদ্ধার করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চাইল্ড হেল্পলাইন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের যৌথ অভিযানে দাসপুর থানার চাঁদপুর গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে শিশুটির প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণের পরে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির নির্দেশে দাসপুর থানা হয়ে শিশুটিকে মেদিনীপুরের ‘সা’ হোমে রাখা হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ দিন আগে পুরুলিয়ার এক প্রসূতি পূর্ব মেদিনীপুরের একটি নার্সিংহোমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এরপর এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে শিশুটিকে চাঁদপুর গ্রামের সুমিত পাইন ও মনিকা পাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই প্রশাসন তৎপর হয়।

এ দিনের অভিযানে নেতৃত্ব দেন দাসপুর-১ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও সৃজন দোলই। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দাসপুর থানার ওসি অঞ্জনি তেওয়ারি, অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের আধিকারিক অনন্যা বেরা, সেকেন্ড অফিসার তরুণকুমার হাজরা, জেলা চাইল্ড হেল্পলাইন ও প্রোটেকশন ইউনিটের কাউন্সেলর শেখ আজিজুর রহমান, সুপারভাইজ়ার মীরা দোলই পূইল্যা, সিডিপিও, স্থানীয় আশাকর্মী ও অন্যান্য আধিকারিকরা।

মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে শিশু হস্তান্তরের ঘটনায় কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। শেখ আজিজুর রহমান জানান, দাসপুর-১ ব্লকে এক ব্যক্তি ‘অচেনা শিশু’ লালন-পালন করছেন— এমন খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও প্রশাসনকে জানানো হয়। এরপর যৌথ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপকুমার দাস জানান, খবর পেয়েই দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়। গ্রামে গিয়ে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর শিশুটিকে ‘সা’ হোমে রাখা হয়েছে। টাকা দিয়ে শিশু হস্তান্তর হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, শিশুটির জন্মদাত্রী মায়ের আগেই দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তৃতীয় বার মেয়ে হওয়াতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। অন্য দিকে, পাইন দম্পতির দুই ছেলে রয়েছে। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানের ইচ্ছা থাকলেও দত্তক নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাঁদের ধারণা ছিল না বলে দাবি।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, উভয় পক্ষই দত্তক সংক্রান্ত সরকারি নিয়ম জানতেন না। আজিজুর বলেন, 'সরকারি গাইডলাইন অনুযায়ী, শিশুকে দত্তক নিতে হলে অনলাইনে 'কারা' পোর্টালে আবেদন জানাতে হয়। এর পরে স্টেপ বাই স্টেপ কয়েকটি পদ্ধতির মাধ্যমে ভালো ভাবে যাচাই হওয়ার পরে দত্তক নেওয়া যায়।'


Share