Garia Bus Stand Siege

রাস্তার উপর বাস, ভোগান্তি চরমে, সি-৫ বাস স্ট্যান্ড বেদখলের অভিযোগে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়

গড়িয়ার সি-৫ বাস স্ট্যান্ডে টিন ঘেরা জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা চরমে। অভিযোগ, মেলার অজুহাতে সরকারি স্ট্যান্ড প্রায় এক বছর ধরে বেহাত। বাস ঢুকতে না পেরে রাস্তায় দাঁড়াচ্ছে, বাড়ছে যানজট। প্রোমোটার যোগসাজশের অভিযোগে সরব বিরোধীরা, নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও।

গড়িয়া বাস স্ট্যান্ড
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০২:৫৫

গড়িয়ার সি-৫ বাস স্ট্যান্ড ঘিরে জমি দখলের অভিযোগে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। অভিযোগ, মেলা করার অজুহাতে গত প্রায় এক বছর ধরে সরকারি বাস স্ট্যান্ডের বড় অংশ টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ফলে সেখানে আর বাস ঢুকতে পারছে না। বাধ্য হয়ে রাস্তার উপরেই বাস রাখতে হচ্ছে। এতে বাড়ছে যানজট, যাত্রীদেরও ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, পরিকল্পিতভাবে জায়গাটি ঘিরে রেখে ভবিষ্যতে প্রোমোটিংয়ের রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এর নেপথ্যে প্রোমোটার চক্র ও জমি মাফিয়াদের হাত রয়েছে বলেই অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

বিরোধী শিবিরের দাবি, শাসক দলের মদতেই বাস স্ট্যান্ডের এই দখলদারি চলছে। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। স্থানীয়দের বক্তব্য, গড়িয়া স্টেশনের লাগোয়া প্রায় ৩০ কাঠা জমির উপর এই সি-৫ বাস স্ট্যান্ড একসময় ট্রাম কোম্পানির বাস ছাড়ার কেন্দ্র ছিল। পরে বাগবাজার, বারাসত, সল্টলেক, উল্টোডাঙা-সহ একাধিক রুটের বাস এখান থেকেই চলত। মেলার জন্য টিন দিয়ে ঘেরা হয়েছিল জমির বড় অংশ। কিন্তু মেলা শেষ হওয়ার পরও সেই টিন আর খোলা হয়নি। প্রায় এক বছর ধরে এই অবস্থা চলায় বাস রাখার জায়গা কমে গেছে।

এই পরিস্থিতিকে ‘অভিনব দখলদারি’ বলে দাবি করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, শাসক দলের মদতেই প্রোমোটাররা জায়গা দখলের ছক কষছে। মানুষের পরিচিত ল্যান্ডমার্কটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। রাস্তায় বাস কমে যাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। এবার বাস স্ট্যান্ডটাই যদি চুরি হয়ে যায়, সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?

স্থানীয়দের একাংশ মনে করছে, বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন এই বাস স্ট্যান্ড রক্ষা করতে আন্দোলনে নেমেছিলেন বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একসময় তিনি এলাকার সাংসদও ছিলেন। বাস স্ট্যান্ডের জমি বেদখল হওয়া ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না বলে জানিয়েছেন সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন । সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয় এমন কোনও কাজ এলাকায় হতে দেবেন না তিনি।

অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পিন্টু দেবনাথ দাবি করেছেন, সি-৫ বাস স্ট্যান্ড সরকারি জমিতে তৈরি নয়, বরং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। 

স্থানীয় সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, একসময় এই স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ বাস চলাচল করত, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০-এ। স্ট্যান্ড দখল হয়ে যাওয়ায় রাতে রাস্তার উপরেই বাস পার্কিং করতে হচ্ছে। দিনের বেলাতেও বাস রাস্তার উপর লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক বাস মাঝ রাস্তায়ই ঘুরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।


Share