Railway Station

নেই অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা, স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে করেই নিয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধ স্বামী, রেল পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ

ঘটনাটি ঘটেছে বরাভূম স্টেশনে। এই ঘটনার পরে রেলের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

মৃত স্ত্রীর দেহ আগলে রেখে বসে আছেন স্বামী।
নিজস্ব সংবাদদাতা, বলরামপুর
  • শেষ আপডেট:২৭ আগস্ট ২০২৫ ১২:২৮

দুর্ভাগ্য স্বামীর! স্ত্রীর মৃতদেহ নিজের কাঁধে করেই নিয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধ স্বামী। জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ দম্পতি একসঙ্গে ঝাড়খণ্ড থেকে ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার সময় তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে মারা যান। সেই মৃতদেহ নিয়ে এদিক-ওদিক করছেন স্বামী। সোমবার এমনই দৃশ্য ধরা পড়েছে পুরুলিয়ার বরাভূম স্টেশনে। এর পরেই স্থানীয়েরা বিক্ষোভ দেখান। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

সোমবার পুরুলিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা-চন্ডিল শাখার বরাভূম স্টেশনে ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, মনোজ কর্মকার ও তাঁর স্ত্রী শান্তা কর্মকার একসঙ্গে ট্রেনে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা ঝাড়খন্ডের কান্ডারা থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, ট্রেনে ফেরার পথে তাঁর স্ত্রী শান্তা অসুস্থ বোধ করেন। যাত্রাপথে অসুস্থ বোধ করায় তাঁদের বরাভূম স্টেশনে নামানো হয়। কিন্তু সেখানে তাঁর স্ত্রী প্রাণ হারান। বৃদ্ধ মনোজ কর্মকার বোতোল কুড়িয়ে অর্থ উপার্জন করেন।

মূলত চলন্ত ট্রেনে কেউ অসুস্থ হলে পরবর্তী স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রে তা করা হয়নি বলে অভিযোগ। ওই বৃদ্ধের আরও অভিযোগ, সেখানে কোনও স্টেচারের ব্যবস্থা ছিল না। অ‍্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও নেই। সাহায্য করার বদলে তাঁর কপালে জুটল হেনস্থা। তাঁর দাবি, বারে বারে সাহায্যের জন্য রেল পুলিশকে বলা হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। উল্টে মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়। কোনও উপায় না পেয়ে শেষমেশ স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে খোড়াতে খোড়াতে বাইরের দিকে এগিয়ে যান। আর এগোনোর ক্ষমতা না থাকায় গেটের সামনেই পড়েন ওই বৃদ্ধ। ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিয়ো (এখন কলকাতা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) হয়েছে।

বৃদ্ধ মনোজ কর্মকার এ দিন প্রায় ছ’ঘন্টা স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে রেখে স্টেশনেই বসে ছিলেন বলে খবর। কয়েক জন স্থানীয় তা দেখে এগিয়ে আসে। এর পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। কেন এতক্ষণ একটা মৃতদেহ স্টেশনে পড়ে থাকবে তা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তোলেন। তাঁরাই জিআরপিকে খবর দেন বলে দাবি। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে। আগামীকাল মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনার পরে রেল আধিকারিকদের মানবিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। যদিও এই বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


Share