Singur Incident

সিঙ্গুরের নার্সের মৃতদেহ মর্গে ঢুকতেই বিজেপি-সিপিএম কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি, ‘মমতাকে বাঁচাতে এসেছে সিপিএম’, মন্তব্য বিজেপির

বিজেপি ও সিপিএম কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায় কলকাতা পুলিশের মর্গের বাইরে। একে অপরকে দেখে স্লোগান দেয়। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তারা।

সেন্ট্রাল এভিনিউয়ে মুখোমুখি বিজেপি-সিপিএম।
নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা
  • শেষ আপডেট:১৫ আগস্ট ২০২৫ ০৮:১০

শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে সিঙ্গুরের নার্সের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। দুপুরে দীপালি জানার মৃতদেহ মেডিকেল কলেজের মর্গে আনা হয়। সেখানে পৌঁছে যায় সিপিএম এবং বিজেপির কর্মীরা। দু’পক্ষের মধ‍্যে তুমুল হইহট্টগোল শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের হয়ে ময়নাতদন্ত আটকাতে এসেছে সিপিএম। বিজেপি মৃতদেহ হাইজ‍্যাক করতে চাইছে বলে পাল্টা দাবি করেছে সিপিএমের।

শুক্রবার শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতাল থেকে দীপালির মৃতদেহ কলকাতা পুলিশের মর্গে নিয়ে আসা হয়। সেখানে পৌঁছতেই ভীর জমান সিপিএম কর্মীরা এবং অভয়া মঞ্চের সদস্যেরা। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই একটা বিজেপির বড় মিছিল এসে মর্গের গেটের সামনে জড়ো হয়। সেখানে পৌঁছোতেই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়। বিজেপির উত্তর কলকাতার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, “আমরা চাই মৃতার দেহের ময়নাতদন্ত হোক এমস বা কমান্ড হাসপাতালে। সিপিএম এখানে এসে তৃণমূলের হয়ে সেটা আটকাতে চাইছে। ওরা এই রাজনীতি দিল্লিতেগিয়ে করুক।’’ পাল্টা এসএফআইয়ের এক কর্মী বলেন, ‘‘তৃণমূলের হয়ে বিজেপি মৃতার পরিবারকে কিনতেনেমেছে। তৃণমূলের হিম্মত হচ্ছে না এখানে আসার, তাই বিজেপিকে পাঠিয়ে দিয়েছে।’’

এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একে অপরকে মারতে উদ্যত হন বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীরা। সিপিএম কর্মীদের উদ্দেশ্য করে ছোড়া হয় জুতোও। পরিস্থিতি সামাল দিতে আশেপাশের থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী ডাকা হয়। দু’পক্ষকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। সেই সময় গাড়িতেই বসেছিলেন দীপালি জানার পরিবারের সদস্যেরা। সেই গাড়ির ওপরে দাঁড়িয়ে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান।

এক বিজেপি কর্মীর কথায়, “আরজি কর-কান্ডের পরে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে দমিয়ে দিয়েছে এই সিপিএম। তৃণমূলের সঙ্গে আতাত রয়েছে তাদের। আরজি করের নির্যাতিতা বিচার পায়নি। এ বার এখানেও এসেছে তৃণমূলের হয়ে ব‍্যাটিং করতে।”

মৃতার বাবা সুকুমার জানার দাবি, শ্রীরামপুরে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করলে ভালো হত। তা হওয়ায় কমান্ড হাসপাতালে তাঁদের মেয়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করানোর দাবিও করেছেন। কলকাতা মেডিকেলে ময়নাতদন্ত করাতে চান বলে জানিয়েছেন। প্রায় সাড়ে ছ’টা নাগাদ সিপিএম কর্মীরা সেখান থেকে প্রায় চলে যায়। যদিও বিজেপির কর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পৌনে ৭টা নাগাদ উত্তর কলকাতার বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, “শুক্রবার মৃতারময়নাতদন্ত হবে না। যে হেতু তাঁর পরিবার চাইছে এমস বা কম্যান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করাতে তাই পরিবারেরইচ্ছামতো সেই প্রক্রিয়া বিজেপির তরফ থেকে করা হবে।” তমোঘ্ন আরও বলেন, ‘‘পরিবারের দায়িত্ব আমরানিয়েছি। এর পর ওঁদের ইচ্ছামতো পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য আমাদের যা করার আমরা তাই করব।’’ রাতে পরিবারকে রাখার জন্য ব্যবস্থাও করে দেন তারা।

বৃহস্পতিবারই মৃতার দেহ শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্য। সেখানেবিজেপি কর্মী ও স্থানীয় কর্মীদের বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়ায়। ‘বিচার চাই’ স্লোগানও ওঠে। পরে পুলিশবাহিনীঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানে ময়নাতদন্ত না হওয়ায় কলকাতায় নিয়ে আসা হয় দেহ।


Share