Nabanna

ভোটের কাউন্টডাউন শুরু, তার আগেই ৯৫ টি প্রকল্পে গতি আনতে নবান্নের তরফ থেকে ২৩ জেলায় পাঠানো হচ্ছে সচিব

ভোটের কাউন্টডাউন শুরু। নির্বাচনের আগে ৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পে গতি বাড়াতে ২৩ জেলায় পাঠানো হচ্ছে হেভিওয়েট আইএএস অফিসার। নবান্নের নির্দেশ—এসআইআর–এর চাপেও কাজে ঢিলেমি নয়, দ্রুত অগ্রগতি ও নজরদারিই এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য।

নবান্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:১৪

ভোট ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষা। সেকারণেই নবান্নে প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরেই নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাবে। আর সেই ঘোষণার পর নতুন কোনও প্রকল্প শুরু করা যাবে না। ফলে ভোটের আগে দ্রুত উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করতেই নজরদারি আরও কঠোর করল রাজ্য সরকার।

এসআইআর–এর চাপের মধ্যেও যাতে চলতি ৯৫টি সরকারি প্রকল্পে কোনও রকম ঢিলেমি না আসে, সে লক্ষ্যেই ২৩টি জেলায় পাঠানো হচ্ছে ২৩ জন সিনিয়র আইএএস অফিসারকে। নির্বাচন ঘোষণার আগে যতটা সম্ভব কাজ এগিয়ে রেখে ভোটের ময়দানে উন্নয়নের খতিয়ান সামনে রাখতে চায় সরকার—এই বুঝেই প্রশাসনকে কাজে লাগানো হয়েছে সর্বোচ্চ তৎপরতায়।

ভোটের আগে তদারকিতে ‘হেভিওয়েট’ আমলারা। নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী, যাঁরা আগে যে জেলায় জেলাশাসক হিসেবে কাজ করেছেন, তাঁদের সেই জেলাতেই ফের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা, অনিয়ম রোধ করা এবং জনঅভিযোগের দ্রুত প্রতিকারে কাজ করবেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী আগেই পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন, ভোটের আগে কাজের গতি যদি ধীর গতিতে হয়, তাহলে তা বরদাস্ত করা হবে না। বরং দ্রুত ও ভাল কাজের জন্য পুরস্কারের কথাও জানিয়েছেন তিনি।

দিন কয়েক আগে উন্নয়ন প্রকল্পগুলি নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে হঠাৎ হাজির হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আমলাদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, এসআইআর–এর আবহে কোনও রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক চাপ তাঁরা যেন না নেন। ভোটের আগে ‘বাংলার বাড়ি’, ‘পথশ্রী’, ‘রূপশ্রী’, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’–সহ প্রধান প্রকল্পগুলির কার্যকারিতা সর্বোচ্চ মানে পৌঁছতে হবে। তাই প্রতিটি জেলায় নজরদারির ক্ষমতা বাড়ানোই সরকারের মূল লক্ষ্য।

নির্বাচনের আগে উন্নয়নকে ‘ভোটের বার্তা’ হিসেবে তুলে ধরতে প্রশাসনিক মহলও দ্রুততার সঙ্গে কাজ নিশ্চিত করতে চাইছে। জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভায় শান্তনু বসু, পূর্ব মেদিনীপুরে বিনোদ কুমার, পশ্চিম মেদিনীপুরে মণীশ জৈন, পুরুলিয়ায় সঞ্জয় বনশল যাচ্ছেন। ঝাড়গ্রামে ছোটেন ডি লামা, বাঁকুড়ায় রশ্মি কমল, আলিপুরদুয়ারে কৌশিক ভট্টাচার্য, জলপাইগুড়িতে দুষ্মন্ত নারিয়ালকে পাঠানো হচ্ছে। দার্জিলিঙে মৌমিতা গোদারা বসু, কোচবিহারে রাজেশকুমার সিনহা, কালিম্পঙে সৌমিত্র মোহন, উত্তর দিনাজপুরে শুভাঞ্জন দাস, মালদায় পি উলাগানাথনকে পাঠানো হচ্ছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে সুরেন্দ্র গুপ্ত, মুর্শিদাবাদে পিবি সেলিম, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নারায়ণস্বরূপ নিগম, হাওড়ায় অন্তরা আচার্য, নদিয়ায় রাজেশ পাণ্ডে, উত্তর ২৪ পরগনায় পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি যাচ্ছেন। হুগলিতে ওঙ্কার সিং মীনা, বীরভূমে শরদকুমার দ্বিবেদী, পূর্ব বর্ধমানে বন্দনা যাদব, পশ্চিম বর্ধমানে বরুণকুমার রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া আরও ১৪ জন আধিকারিকের একটি পৃথক টিম তৈরি হয়েছে, যারা সিনিয়র সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। লক্ষ্য, ভোটের আগেই প্রকল্পের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরা।


Share