Nobel Prize for Medicine

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে নিয়ন্ত্রণে! সেই গবেষণার জন্যই চিকিৎসাবিদ্যায় মিলল নোবেল

রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যে কোষটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল ‘টি সেল’। একে বলা যায় শরীরের প্রহরী। এই কোষগুলিই বিভিন্ন ভাইরাস বা জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত কোষগুলিকে ধ্বংস করে। এর পাশাপাশি শরীরে আরও এক ধরণের রোগ প্রতিরোধক কোষ রয়েছে— ‘রেগুলেটরি টি সেল’। এই কোষগুলিই মানবদেহে ‘অটোইমিউন’ ব্যাধি হওয়া আটকায়। এই বিষয়টি প্রথম আবিষ্কার করেন তাঁরা।

(বাঁ দিক থেকে) মেরি ই ব্রুনকো, ফ্রেড র‍্যাম‌সডেল এবং শিমন সাকাগুচি।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট:০৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৪:১৫

চলতি বছরে চিকিৎসায় নোবেল পাচ্ছেন মেরি ই ব্রুনকো, ফ্রেড র‍্যামসডেল এবং শিমন সাকাগুচি। সোমবার বিকেলে চিকিৎসাশাস্ত্রে ২০২৫ সালের জন‍্য নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি। 

মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলিকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তা নিয়ে গবেষণার জন্য নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন এই ত্রয়ী। কী কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজ শরীরের অঙ্গকে আক্রমণ করতে পারে না, তা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সংক্রান্ত আবিষ্কারের জন্যই চিকিৎসায় নোবেল পেলেন মেরি, ফ্রেড এবং শিমন। 

এদের মধ্যে মেরি ই ব্রুনকো ও ফ্রেড র‍্যামসডেল যুক্তরাষ্ট্রের এবং শিমন সাকাগুচি জাপানের নাগরিক। 

আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার পরে মেরি বর্তমানে সিয়াটেলে ইনস্টিটিউট ফর সিস্টেম্‌স বায়োলজিতে সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসাবে কাজ করছেন। 

লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন ফ্রেড। তিনি এখন সান ফ্রান্সিসকোয় সোনোমা বায়োথেরাপিটিক্‌সে বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা হিসাবে কর্মরত। 

সাকাগুচি পিএইচডি করেন জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে তিনি ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলজি ফ্রন্টিয়ার রিসার্চ সেন্টারে অধ্যাপনা করেন। 

তাঁদের আবিষ্কার ক্যান্সার এবং অটোইমিউনের মতো রোগের গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নতুন ক্ষেত্রের ভিত্তি স্থাপন করেছে এবং নতুন চিকিৎসার বিকাশকে উৎসাহিত করেছে। 

সোমবার স্টকহোমের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাশাস্ত্রে পুরস্কার দিয়ে এবারের নোবেল ঘোষণা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঘোষণা হবে পদার্থবিদ্যা, বুধবার (৮ অক্টোবর) রসায়ন, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সাহিত্য এবং শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ঘোষণা করা হবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম। আর অর্থনীতিতে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে ১৩ অক্টোবর। 

আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী ১০ ডিসেম্বরেই নোবেলের পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান হবে। বিজয়ীরা পাবেন ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ ডলার সমমূল্য), সঙ্গে থাকবে ১৮ ক্যারেটের সোনার পদক ও একটি সম্মাননাপত্র।

কী আবিষ্কার করেছেন তাঁরা? 

প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্য জীবাণু থেকে মানব শরীরকে রক্ষা করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এটি দেহের রোগজীবাণুকে শনাক্ত করে তারা শরীরের নিজস্ব কোষ থেকে আলাদা করে। এই রোগজীবাণুগুলির প্রতিটির ভিন্ন ভিন্ন গড়ন রয়েছে। আবার অনেক জীবাণুর কোনও বিশেষ প্রতিরূপের সঙ্গে আমাদের মানবদেহের কোষের অনেক মিলও রয়েছে। 

তা হলে কোন ক্ষেত্রে জীবাণুর উপর আক্রমণ করতে হবে, কোন ক্ষেত্রে করতে হবে না, তা কী ভাবে স্থির করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা? নিজ শরীরকেই আক্রমণ করা থেকে কী বাধা দেয় এটিকে? তা নিয়ে গবেষণা করতে করতেই এই ত্রয়ী জানতে পারেন, এর নেপথ্যে রয়েছে একটি বিশেষ ধরনের রোগ প্রতিরোধক কোষ। এই কোষগুলিকে বলা হয় ‘রেগুলেটরি টি সেল’। 

রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যে কোষটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল ‘টি সেল’। একে বলা যায় শরীরের প্রহরী। এই কোষগুলিই বিভিন্ন ভাইরাস বা জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত কোষগুলিকে ধ্বংস করে। এর পাশাপাশি শরীরে আরও এক ধরণের রোগ প্রতিরোধক কোষ রয়েছে— ‘রেগুলেটরি টি সেল’। এই কোষগুলিই মানবদেহে ‘অটোইমিউন’ ব্যাধি হওয়া আটকায়। এই বিষয়টি প্রথম আবিষ্কার করেন তাঁরা।


Share