Bay Trawler Tragedy

আন্তর্জাতিক জলসীমান্তে ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে উদ্ধার রঞ্জন–সঞ্জীব, এখনও নিখোঁজ তিন, সমুদ্রে চলছে তল্লাশি অভিযান

বঙ্গোপসাগরে ট্রলার দুর্ঘটনায় এফবি পারমিতা–১১ থেকে উদ্ধার দুই মৎস্যজীবীর দেহ। বাংলাদেশি ট্রলার অনুপ্রবেশে ৩৫ জন আটক। নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি, উপকূল নিরাপত্তা জোরদার।

বাংলাদেশি ট্রলার অনুপ্রবেশে ৩৫ জন মৎস্যজীবী
নিজস্ব সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ
  • শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:৪০

বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্র থেকে টেনে আনা দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলার এফবি পারমিতা–১১-র কেবিনের ভেতর থেকে বুধবার ভোররাতে নিখোঁজ দুই মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম রঞ্জন দাস ও সঞ্জীব দাস। রঞ্জন পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা এবং সঞ্জীব কাকদ্বীপের বাসিন্দা। ট্রলারের ভেতরে আর কোনও দেহ আটকে রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

গত রবিবার ১৬ জন মৎস্যজীবী নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল ট্রলারটি। সোমবার সকালে ভারত–বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জলসীমান্তের কাছে ট্রলারটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার সময় ট্রলারে থাকা মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, বাংলাদেশি নৌসেনার একটি জাহাজ ধাক্কা দিলে ট্রলারটি ডুবে যায়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাংলাদেশের নৌসেনা। দুর্ঘটনার পর ১১ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ ছিলেন পাঁচজন।

মৎস্যজীবী সংগঠনের উদ্যোগে মঙ্গলবার গভীর রাতে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি কাকদ্বীপের ময়নাপাড়া ঘাটে টেনে আনা হয়। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে ট্রলারের কেবিনের ভেতর থেকে দুই মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি নিখোঁজদের খোঁজে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজের পাশাপাশি মৎস্যজীবী সংগঠনের পাঠানো ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে তল্লাশি অভিযান চলছে।

এ দিন দুপুরে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে মৃত দুই মৎস্যজীবীর ময়নাতদন্ত হয়। সেখানে পরিবারের সদস্যরা দেহ শনাক্ত করেন।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার গভীর রাতে সমুদ্রে টহল দেওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জল সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী দু’টি বাংলাদেশি ট্রলার আটক করে। আটক ট্রলার দু’টির নাম সাবিনা–১ ও রূপাচি সুলতানা। উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই ট্রলার থেকে মোট ৩৫ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে আটক করা হয়েছে। ট্রলার দু’টিকে ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য বন্দরে নিয়ে এসে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

উপকূলরক্ষী বাহিনী সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে একই অভিযোগে পাঁচটি বাংলাদেশি ট্রলার-সহ মোট ১২২ জন মৎস্যজীবীকে আটক করা হয়েছিল। তারা এখনও ভারতীয় জেলে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন। একের পর এক অনুপ্রবেশের ঘটনায় উপকূল নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।

সাগরের এসডিপিও সুমনকান্তি ঘোষ বলেন, 'ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে সুন্দরবনের জলপথে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।' প্রশাসনের অনুমান, বাংলাদেশে বর্তমানে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেখানকার মৎস্যজীবীরা গোপনে সমুদ্রে নেমে ভারতীয় জল সীমান্তে ঢুকে পড়ছেন। পাশাপাশি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অনুপ্রবেশের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন।


Share