Cyber Fraud

পশ্চিমবঙ্গের মাটিতেও ঘাটি গেড়েছে ‘জামতাড়া গ্যাং’! পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার ৪৬, উদ্ধার লক্ষাধিক নগদ

ফের সক্রিয় জামতাড়া গ্যাং। গত এক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে সাইবার প্রতারণার অভিযোগে ৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক নগদ টাকা।

ভবানী ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করছেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার এবং ডিআইজি সাইবার অমিত ভরত রাঠোর।
এখন কলকাতা ডেস্ক: কলকাতা
- নিজস্ব চিত্র
  • শেষ আপডেট:১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০০

ফের সক্রিয় জামতাড়া গ্যাং। সাইবার ক্রাইমের স্বর্গরাজ্য এই জামতাড়া। তবে এই জামতাড়ার সাইবার প্রতারকেরা কিন্তু আর আটকে নেই ঝাড়খন্ডের সীমানায়। গ্যাং-এর দাপাদাপি শুরু হয়েছে এই রাজ্যেও। প্রায় দু’শোর বেশি প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই অভিযোগ ভিত্তিতে তদন্তে নেমে, এই জামতাড়া গ্যাং-এর সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করল রাজ্য পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর সিমকার্ড, ডেভিড কার্ড এবং মোবাইল ফোন।? 

জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিককালে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, চন্দননগর, হুগলি গ্রামীণ এবং পূর্ব বর্ধমানের কিছু এলাকা থেকে ক্রমাগত সাইবার প্রতারণার অভিযোগ আসছিল। পুলিশ জানিয়েছে, গত একমাসে ঝাড়খণ্ড লাগুয়া এলাকায় এই প্রতারণার ২৫০টি অভিযোগ জমা পড়ে। আর এরপরেই টনক নড়ে রাজ্য পুলিশের। প্রতারকদের খোঁজে রাজ্য পুলিশের তরফে শুরু করা হয় বিশেষ অভিযান। নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাইবার শক্তি’। উল্লেখ্য, এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিআইজি সাইবার অমিত ভরত রাঠোর।? 

রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে বীরভূমের খয়রাশোলে অভিযানে চালায় পুলিশ। সেখান থেকে তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসে তদন্তকারীদের। এরপরই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিকল্পিত অভিযান চালানো হয়েছে। সাইবার প্রতারণার অভিযোগে মোট ৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতদের প্রত্যেকেরই যোগ রয়েছে জামতাড়া গ্যাং-এর সঙ্গে। গ্রেফতারির পাশাপাশি ধৃতদের থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৮৪টি মোবাইল ফোন, ৮৪টি সিমকার্ড, দুটি ল্যাপটপ, ২৯টি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ১৯টি ডেবিট কার্ড। চার লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ৯০০টি ৫০০ টাকার নোট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।? 

বৃহস্পতিবার পুলিশ জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলের ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন এলাকাগুলিতেই নিজেদের ঘাটি গেড়েছিল এই গ্যাং-এর সদস্যেরা। রাজ্যের এইসব অঞ্চলগুলিতে রীতিমত ঘর ভাড়া নিয়ে নিজেদের প্রতারণার কাজ চালাত এই গ্যাং-এর সদস্যরা। অভিযোগ, অভিযুক্তেরা অনলাইন গেমিং, চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, ডিজিটাল আরেস্ট, গ্যাসের ভর্তুকি বাড়িয়ে দেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন উপায় কোটি কোটি টাকার প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিল। পুলিশের আরও অভিযোগ, এই প্রতারণার কাজ নিপুণভাবে করতে নিজেকে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন করত। সবটাই ভুয়ো সিমকার্ড ব্যবহার করা হয়েছে।? 

এ দিন ভবানী ভবনে রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, “জামতাড়া গ্যাং বর্তমানে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগঢ় সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। জামতাড়ার কথা এখন আমরা সবাই জেনে গিয়েছি। সেই জন্য পুলিশের নজর এড়াতে তারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে।”? 


Share