University of Calcutta

টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র! তিন মাস আগে ঠিক হয়েছে, জানালেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য

আগামী ২৮ অগাস্ট, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিন রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকম এবং বিএ এলএলবি-র পরীক্ষা। বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
নিজস্ব সংবাদদাতা: কলকাতা
  • শেষ আপডেট:২৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:০৫

আগামী ২৮ অগাস্ট তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিকম এবং বিএ এলএলবি- এর পরীক্ষা ঘোষণা করেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সিদ্ধান্তকে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে চিহ্নিত করেছেন টিএমসিপি শাসকদলের এই অভিযোগ মানতে নারাজ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তাঁর কথায় , এই সিদ্ধান্ত তিন মাস আগে নেওয়া হয়েছে। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে মেনে চলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় যাবে?।

আগামী ২৮ আগস্ট, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিকম সেমিস্টার-৪ এবং বিএ এলএলবি সেমিস্টার-৪ এর পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করেছে। এই নিয়ে টিএমসিপির রাজ‍্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “ছাত্র সমাবেশের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে যাঁরা আদর্শিত এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যাঁরা বিশ্বাসী তাঁদের আটকে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র রচনা করা হয়েছে।”

প্রতি বছর এই দিনের ছাত্র সমাবেশে মূলত কলকাতার সমস্ত কলেজের ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশের জমায়েত হয়ে থাকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ওই দিন দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তৃণমূলের ছাত্র সামাবেশ গান্ধী মূর্তির পাদদেশে শুরু হবে বেলা ১২টা থেকে। সেই কারণে ওই দিন কেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে পরীক্ষা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টিএমসিপির রাজ‍্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, “এটি কোনও সাধারণ একাডেমিক সিদ্ধান্ত নয়। ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দেওয়া এবং দিল্লির ইশারায় চলা এক রাজনৈতিক অপকৌশল।”

যদিও টিএমসিপির যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তিনি জানিয়েছেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক। পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক করে বোর্ড অফ স্টাডিজ। তিন মাস আগে থেকে তা ঠিক হয়ে যায়।” কেন তিন মাস আগে? তার প্রেক্ষিতে তিনি যুক্তিও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক করার সময় সরকারি ছুটিগুলি দেখি। রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানকে আমরা গুরুত্ব দিতে নারাজ।” অর্থাৎ সরকারি ছুটি এবং রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয় তাহলে যে পরীক্ষা নেওয়া কার্যত অসম্ভব তা মেনে নিয়েছেন তিনি।

টিএমসিপির রাজ‍্য সভাপতি ত্রিনাঙ্কুর ভট্টাচার্য উপাচার্যকে ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’ বলে আক্রমণ করেছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এই উপাচার্যের এমন আত্মকেন্দ্রিক পদক্ষেপ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, গণতন্ত্রবিরোধী এবং নিন্দনীয়।” যদিও এই বিষয়ে শান্তা দত্ত বলেছেন, “আমি কোনও রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষক নই। তৃণমূল থেকে শুরু করে, বিজেপি থেকে শুরু করে, সিপিআইএম থেকে শুরু করে এসইউসিআই থেকে শুরু করে সবাই আমার কাছে সামান অধিকার পাবে।”

এই নিয়ে এভিবিপি নেতা নীলকন্ঠ ভট্টাচার্য বলেন, “কলেজে কলেজে যারা নেশাদ্রব্য বণ্টন করে তারা ওই দিন একটা জায়গায় জমায়েত হয়ে পাগলু নাচবে। তাদের জন্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার দিন পেছবে।” তিনি আরও বলেন, “এমনিতেই ছাত্রছাত্রীরা ওদের থেকে বিমুখ হয়েছে। যারা পড়াশুনা করে আর যাই করুক তৃনমূল ছাত্র পরিষদ করবে না।”


Share