Some Miscreants With Firearms At Gulshan Colony

দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে উত্তপ্ত গুলশন কলোনি, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাদপি, বাইক-দোকান ভাঙচুর, চলল বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও

শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের গুলশন কলোনিতে নিরাপদে ঠাঁই দিয়েছে। এদের নাম বেআইনিভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে, দলে নিয়ে নিজেদের অপরাধের সাম্রাজ্য বিস্তার করছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে।”

গুলশন কলোনিতে ফের দুষ্কৃতী তাণ্ডব।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট:১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০২

ফের উত্তপ্ত গুলশন কলোনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, তিনটি মোটরবাইকে চেপে ন’জন দুষ্কৃতী সেখানে আসে। একটি বিরিয়ানির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইকে ভাঙচুর চালায়। ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ তিনজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় তৃণমূলকে নিশানা করে সমাজমাধ‍্যমে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

স্থানীয় সুত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আচমকা দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। চলে গোলাগুলি। বোমাবাজিও হয়েছে বলে দাবি। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের গুলশন কলোনিতে মোটরবাইকে চেপে অন্তত ন’জন দুষ্কৃতী একটি বিরিয়ানির দোকানের সামনে আসে। তাঁদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। ভয় দেখাতে শুরু করে। এর পরে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইকে ভাঙচুর চালানো হয়। সবার হাতে রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে থেকে এক যুবক বন্দুক বের করে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছে ওই ভাইরাল ভিডিয়োতে।

ঘটনার পরে এলাকাবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে দোকান, বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ করে দেন। তাঁদের অভিযোগ, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এই ঘটনা তৃণমুলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ। 

পুলিশ সূত্রে যে ন’জন দুষ্কৃতীর নাম উঠে এসেছে, তারা হল- মিনি ফিরোজ, মহম্মদ সাদিক, আত্মারাম, মুস্তফা, মামুন, ছোটা রাজা, শাহবাজ, আহমেদ হোসেন ওরফে মহম্মদ মধু এবং মহম্মদ সাজিদ। এরা মধ‍্যে প্রায় সবাই গুলশন কলোনিতে থাকত বলে জানা গিয়েছে। মিনি ফিরোজ বেশ কয়েক বছর ধরে বাড়ি ছাড়া বলেও জানা গিয়েছে। এলাকার দখল নিতেই এই কাজ বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের নামে একাধিক থানায় মামলা রয়েছে।

এ দিন লালবাজার জানিয়েছে, মহম্মদ সাজিদ, আহমেদ হোসেন এবং রাজা খানকে এন্টালি এবং নারকেলডাঙা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল, একটি ৭এমএম পিস্তল এবং চার রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে গুলশন কলোনির অশান্তির ঘটনায় যুক্ত রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি। এর নেপথ্য বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

ঘটনার পরে রাজনৈতিক সুর চড়িয়েছে বিজেপি। গুলশান কলোনিকে কলকাতা শহরের অপরাধ জগতের 'অন্ধকূপ' বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের গুলশন কলোনিতে নিরাপদে ঠাঁই দিয়েছে। এদের নাম বেআইনিভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে, দলে নিয়ে নিজেদের অপরাধের সাম্রাজ্য বিস্তার করছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠেছে।” তাঁর সরকারের অপশাসনের কারণে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।


Share