TMCP

তৃণমূলের ‘জয় বাংলা’ লেখা পোষাক পড়ে নিলেন কলেজের অধ্যক্ষ, বললেন, ‘ছাত্রদের অনুরোধ রেখেছি’

‘জয় বাংলা’ লোগো দেওয়া পোষাক বিতরণ করছেন সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ‍্য কলেজের অধ্যক্ষ জাফর আলি আখান। এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজের অধ্যক্ষ জাফর আলি আখান।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট:২৯ আগস্ট ২০২৫ ০৭:৪৩

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠার দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা ‘বাতিল’ করার জন্য যাঁরা উপাচার্যকে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিনিও ছিলেন একজন। সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ‍্য কলেজের অধ্যক্ষ জাফর আলি আখান নিজেই তা জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁকেই কলেজ চত্বরে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের পোষাক বিতরণ করতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, নিজেও ‘জয় বাংলা’ লেখা পোষাক পরে নিলেন। তাঁর সাফাই, ছাত্রছাত্রীরা দাবি করেছিলেন। সেই অনুরোধ রাখতেই তিনি এই কর্মকাণ্ডে সামিল হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন, কলেজে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হচ্ছে। কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।

আজ, বৃহস্পতিবার সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য কলেজে যখন চলছে সেমিস্টার পরীক্ষা, তখন সেই কলেজের প্রধানকেই দেখা গিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের পোষাক বিলি করতে। জাফর জানান, এই কর্মসূচির আয়োজক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাঁর সাফাই, “মধ‍্য কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। সদস্যদের পাঞ্জাবি, উত্তরীয় এবং টিশার্ট দেওয়া হয়েছে।” অধ্যক্ষের এ-ও দাবি করেন, “ওয়েবকুপা এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে অনুদান দেওয়া হয়েছে। সেই টাকায় এই পোষাক কেনা হয়েছে।”

এই কর্মসূচির সময় নিজেও গায়েও সেই পোষাক পড়ে নেন। যাতে ছিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখা লোগো। কলেজে পরীক্ষা চলাকালীন কেন তিনি এমন কাজ করেছেন তা-ও তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে স্পষ্ট করেছেন। অধ‍্যক্ষ বলেন, “আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা এবং টিএমসিপি ইউনিটের সদস্যেরা এই কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। আমি উপরে ছিলাম। ওরা আমায় ডেকে নিয়ে এসেছে। বলল, আপনিও দু-একটা পোষাক দিয়ে দিন। অনুরোধ রেখেছি।”

তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সেখানে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। অধ‍্যক্ষ জাফর আলি আখান জানিয়েছেন, “কর্মীরা বাইরে থেকে মিছিল করে সভাস্থলে গিয়েছেন। এতে পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হয়নি। শান্তিপূর্ণ ভাবে সব মিটেছে। কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি।”

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ এলএলবি এবং বিকম চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল। পড়ুয়া, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মীদের একাংশের তরফ থেকে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-কে এই নিয়ে চিঠি দিয়েছিল অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকদের সংগঠন। তারা জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবার যেহেতু তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস, তাই পরীক্ষার্থীরা কলেজে পৌঁছোতে সমস্যায় পড়তে পারেন। পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। যদিও শান্তা স্পষ্টই জানিয়ে দেন, পরীক্ষার দিন তিনি পরিবর্তন করবেন না। সেই মতো নির্ধারিত দিনেই হয়েছে পরীক্ষা। যাঁরা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন জাফরও। তিনি বলেন, ‘‘অনুমোদিত কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে অনুরোধ করেছিলাম। সরকারও করেছিল। বিভিন্ন কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি হয়তো। পরীক্ষার সূচি নির্ধারিত থাকে। তবে পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে। তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই।’’


Share