Kolkata Police Arrested In Alleged Human Trafficking Case

সিপির কড়া বার্তার পরেই সক্রিয় পুলিশ, বড়তলা থেকে উদ্ধার ন’জন নাবালিকা, গ্রেফতার দুই নারী পাচারকারী-সহ ছ’জন

শহরে সক্রিয় নারী পাচারকারীচক্রের পর্দাফাঁস করল কলকাতা পুলিশ। ন’জন নাবালিকাকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছে। এই চক্রের আরও কেউ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নারী পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার ছ’জন।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট:১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০২:২১

চলতি মাসেই দুর্গাপুজো। সেই পুজোর সময় শহরের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও খামতি রাখা হবে না, তা নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা। এই বার্তার পরে সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা বড়তলা এলাকা থেকে পাচারের আগেই ন’জন নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে। এর সঙ্গে মাববপাচারের অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় ধনধান্য স্টেডিয়ামে যখন দুর্গাপুজো কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠকে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে বক্তব্য রাখছেন, তখনই লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, বড়তলা থানার সোনাগাছি এলাকায় নাবালিকা পাচার করা হতে পারে। তার জন‍্য বেশ কয়েক জন নাবালিকাকে ৪/এ গুলু অস্তাগার লেনের একটি বাড়িতে এনে রাখা হয়েছে। অভিযানে নামে লালবাজারের মানবপাচার দমন শাখার গোয়েন্দারা। পুলিশ সুত্রের খবর, সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ন’জন নাবালিকাকে। এ ছাড়াও এক তরুণীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। 

মানবপাচারের অভিযোগে চার পাচারকারী-সহ মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাচারকারীদের নাম সরস্বতী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার স্বামী অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনই ওই এলাকারই বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এরা এই পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা জোর করে নাবালিকাকেদের দেহব‍্যবসায় নামানো হয়েছিল।

এ ছাড়াও চারজন দালালকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, সুমন হালদার, পুজা মিস্ত্রি, দ্বীপ চট্টোপাধ্যায় এবং আকাশ চৌধুরী। এদের মধ্যে সুমন হালদার এবং আকাশ চৌধুরী দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা। বাকি দু’জন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা বলে লালবাজার সূত্রের খবর। যদিও নাবালিকাদের কোথা থেকে আনা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তা জানার চেষ্টা করছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। এর পাশাপাশি এই চক্রের সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চলতি মাসেই দুর্গাপুজো পুজো। শহরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তা নিয়ে পুলিশের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন কমিশনার মনোজ বর্মা। তাঁর কথায়, ‘পুলিশের খাতায় যাঁরা ‘দাগি অপরাধী’, তাঁদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সজাক রয়েছে কলকাতা পুলিশ।”

মঙ্গলবার নাবালিকা উদ্ধারের ঘটনায় দুর্বার সংগঠনের কর্মকর্তা মহেশ্বেতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখানে সবাই নিজের ইচ্ছায় আসেন। তাঁদের মধ্যে কেউ নাবালিকা নয়। তার পেটের তাগিদে এই কাজ করে থাকেন। পুলিশকে অনুরোধ করব, পুরো চক্রটিকে খুঁজে বের করার। পুলিশকে এটাও বলব, যাতে অভিযুক্তেরা টাকা খাইয়ে বেরিয়ে না আসতে পারে।”


Share