Theft in train

দূরপাল্লার ট্রেনে অভিনব চুরি, শালিমার রেল পুলিশের জালে ‘শান সি সুলতানপুরী’ গ্যাংয়ের তিন সদস্য

দূরপাল্লার ট্রেনে অভিনব পদ্ধতিতে সোনা, নগদ অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী চুরি ‘শান সি সুলতানপুরী’ গ্যাংয়ের। অবশেষে দলের এক সদস্যের মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করেই তিনজনকে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে ধরা হয়। ধৃতদের ১১ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের খোঁজে নেমেছে রেল পুলিশ।

‘শান সি সুলতানপুরী’ গ্যাং-এর সদস্য
নিজস্ব সংবাদদাতা, হাওড়া
  • শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ০১:২৭

দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রীদের ট্রলি ব্যাগ না কেটে অভিনব পদ্ধতিতে সোনা, নগদ অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী চুরি করত এক আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতীচক্র। অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের দীর্ঘ দূরত্বের ট্রেনে ধারাবাহিক চুরির ঘটনার পর অবশেষে শালিমার রেল পুলিশ গ্রেফতার করল দিল্লির কুখ্যাত ‘শান সি সুলতানপুরী’ গ্যাংয়ের মূল মাথা-সহ তিন সদস্যকে। ধৃতরা হল—অজমর সিংহ, রণবীর সিংহ ও মুকেশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৩০ গ্রাম সোনার গয়না এবং জাল আধার, ভোটার ও প্যান কার্ড।

রেল পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই এই দলটির খোঁজ চলছিল। দলের এক সদস্যের মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করেই তিনজনকে সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে ধরা হয়। তদন্তকারীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে চুরির নেপথ্যে থাকা সুচিন্তিত পরিকল্পনা। দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবকে নিশানা করে গ্যাংটি দিল্লি থেকে বিমানে করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে পৌঁছত। তারপর নির্দিষ্ট দূরপাল্লার ট্রেনে চেপে শিকার খুঁজত তারা। দলে থাকত চার-পাঁচজন সদস্য।

স্টেশনে ট্রেন থামলে যাত্রীরা নেমে আসার প্রস্তুতি নিতেন। তখনই মোটা আকৃতির এক সদস্য ‘ওয়াল’-এর ভূমিকা নিয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের গতিরোধ করত। তার ঠিক পিছনে থাকত ‘মাস্টার’, যার কাজ ছিল লোহার সরু শিকের মতো যন্ত্র দিয়ে ট্রলি ব্যাগের চেন না খুলেই ভিতরের জিনিসপত্র নিঃশব্দে বের করে নেওয়া। পুরো কাজ সারতে তাদের লাগত মাত্র দুই মিনিটেরও কম সময়। ভদ্র ব্যবহার করে, কোনো গোলমাল তৈরি না করেই দুষ্কৃতীরা বারবার শিকার ধরতে সফল হয়েছিল।

তদন্তে জানা গেছে, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম দিল্লির সুলতানিপুরে বসবাসকারী এই গ্যাং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধ চালালেও তাদের নাগাল পাওয়া যাচ্ছিল না। ধৃতদের কাছ থেকে যে আধার, ভোটার ও প্যান কার্ড উদ্ধার হয়েছে সেগুলোর কোনওটিই আসল নয়। হরিয়ানার সঞ্জয় গান্ধী নগরের ট্রান্সপোর্ট নগরের একটি দোকান থেকেই নকল পরিচয়পত্রগুলি বানানো হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। ধৃতদের ১১ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের খোঁজে নেমেছে রেল পুলিশ।


Share