Mohun Bagan Won IFA Shield 2025

আলোর উৎসব বাগানে, টাইব্রেকারে হারল ইস্টবেঙ্গলকে, ২২ বছর পরে আইএফএ শিল্ড জিতল মোহনবাগান

চলতি মরশুমের প্রথম দুই ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের কাছে হেরে গিয়েছিল মোহনবাগান। তাই অনেকেই এ দিন লাল-হলুদকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিলেন। ময়দানের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডার্বিতে কোনও ফেভারিট হয় না। ম্যাচে যারা ‘স্নায়ু’ ধরে রাখতে পারবে, তারাই জিতবে। আর এ দিন সেটাই হল।

আইএফএ শিল্ড নিয়ে মোহনবাগান ফুটবলারদের উল্লাস।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ০২:৩১

ডার্বির রং সবুজ-মেরুণ। জয়ের হ্যাটট্রিক হল না ইস্টবেঙ্গলের। ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতল মোহনবাগান। শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম‍্যাচের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ১-১ ছিল ফলাফল। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। বিশাল কাইয়েথে দুরন্ত সেভ ২২ বছর পরে ১২৫তম শিল্ড ঘরে নিয়ে এল সবুজ-মেরুণ ব্রিগেড।

চলতি মরশুমের প্রথম দুই ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের কাছে হেরে গিয়েছিল মোহনবাগান। তাই অনেকেই এ দিন লাল-হলুদকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিলেন। ময়দানের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডার্বিতে কোনও ফেভারিট হয় না। ম্যাচে যারা ‘স্নায়ু’ ধরে রাখতে পারবে, তারাই জিতবে। আর এ দিন সেটাই হল। ম্যাচের নির্ধারিত সময় ও এক্সট্রাইম ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারেও স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে পাঁচটি শটেই গোল করল মোহনবাগান। আর ইস্টবেঙ্গলের জয় গুপ্তর শট আটকে গেল বিশাল কাইথের বিশ্বস্ত হাতে। বাইশ বছর পর আইএফএ শিল্ড জিতে মোহনবাগান সমর্থকদের সব দুঃখ ভুলিয়ে দিলেন হোসে মোলিনার ছাত্রেরা।

এ দিনের ম্যাচের ৩২ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। ম্যাকলরেনকে বক্সের মধ্যে আনোয়ার ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বাগান। কিন্তু জেসন কামিংস সেই সুযোগ হাতছাড়া করেন। এর চার মিনিটের মধ্যেই আহাদাদ গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেয়। সবুজ-মেরুণ শিবিরের গোলরক্ষক বিশাল কাইথ শরীর ছুড়ে দিলেও বল বাঁচাতে পারেননি। প্রথমার্ধের সংযোজিত সময়েই সমতায় ফেরে মোহনবাগান। লিস্টন কোলাসোর দুরন্ত পাশ থেকে গোল করে মোহনবাগানকে ম্যাচে ফেরান আপুইয়া। ১-১ গোলের শেষ হয় প্রথমার্ধ।

ম‍্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৫৪ মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন জেসনস কামিন্স। লিস্টনের বাড়ানো বলে তিনি শট মারার আগেই ক্লিয়ার করে দেন আনোয়ার। এ দিন ছন্দে ছিলেন না কামিন্স। ৫৯ মিনিটে কামিন্সকে মাঠ থেকে তুলে নেন কোচ হোসে মোলিনা। নামানো হয় রবসন রবিনহোকে।

কিন্তু প্রথমার্ধের প্রথম ১০ মিনিট পর থেকেই দু’দলই ডিফেন্সিভ হয়ে পড়ে। ৬১ মিনিটে সাহালকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন লালচুংনুঙ্গা। লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজোঁ ৬৪ মিনিটে প্রথম পরিবর্তন আনেন। মাঠে নামেন হিরোশি, মিগুয়েল ও জয় গুপ্তা। এ দিনই ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে অভিষেক হল জাপানি স্ট্রাইকার হিরোশি ইবুসুকির। নেমেই তিনি সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু হিরোশির হেড তৎপরতার সঙ্গে বাঁচিয়ে দেন বাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। ৭৯ মিনিটে তিনি অবশ্য বল জালে জড়িয়েছিলেন, কিন্তু সঙ্গত কারণেই অফসাইড দেন রেফারি। ৮১ মিনিটে ডিফেন্স সলিড করতে থাপার পরিবর্তে দীপক টাংরিকে নামানো হয়। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় ‘এক্সট্রা টাইমে’।

এক্সট্রা টাইমের শুরুতেই অবশেষে মনবীর সিংহকে নামান মোলিনা। ১৪ মিনিটে আপুইয়ার বাড়ানো বল গোলে ঠেলতে ব্যর্থ হন ম্যাকলরেন। এক্সট্রা টাইম-এর প্রথমার্ধেও গোল পেল না কোনও দল। অবশেষ দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। এক্সট্রা টাইমেও কোনও গোল হল না, ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারের আগে গোলরক্ষক পরিবর্তন করে ইস্টবেঙ্গল। প্রভুসুখন গিলের পরিবর্তে নামেন দেবজিৎ মজুমদার। পেনাল্টি শ্যুট আউটে প্রথমেই গোল করে ইস্টবেঙ্গলেকে এগিয়ে দেন মিগুয়েল। এরপর মোহনবাগানকে রবসন সমতায় ফেরান। পরের শটে গোল করতে ভুল করলেন না ইস্টবেঙ্গলের কেভিন। মনবীর সিংহ গোল করে ফলাফল ২-২ করেন। পরের শটে গোল করেন মহেশ। গোল করতে ভুল করেনি লিস্টনও। জয় গুপ্তার দুরন্ত শট বাঁচিয়ে মোহনবাগানকে বাড়তি অক্সিজেন এনে দেন বিশাল কাইথ। পরের শটে গোল করে বাগানকে এগিয়ে দেন দিমি পেত্রাতোস। পরের শটে গোল করে যান হিরোশি। তবে শেষ শটে গোল করে মোহনবাগানকে টাইব্রেকারে জিতিয়ে আইএফএ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন করলেন মেহতাব সিংহ।


Share