TET scam

প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলায় সুপ্রিম কোর্টে 'ক্যাভিয়েট' দায়ের করলেন কর্মরত শিক্ষকরা

প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল ৷ ছ'মাসের বেশি সময় ধরে শুনানির পর বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ প্রাক্তন বিচারপতি (অধুনা তমলুকের বিজেপি সাংসদ) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খারিজ করে ৷

সুপ্রিম কোর্ট
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিল্লি
  • শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৫৬

প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের মামলায় সুপ্রিম কোর্টে 'ক্যাভিয়েট' দায়ের করলেন কর্মরত শিক্ষকরা ৷ গত ৩ ডিসেম্বর তাঁদের মানবিক কারণে চাকরি বহালের রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট ৷ এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হতে পারে বলে মনে করছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একটা বড় অংশ ৷ সেক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্য না-শুনে শীর্ষ আদালত যাতে কোনও নির্দেশ না দেয় তা নিশ্চিত করতেই ক্যাভিয়েট ফাইল দায়ের করলেন কর্মরত শিক্ষকদের কয়েক জন ।

গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালে নিযুক্ত ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার আগেই কর্মরত শিক্ষকরা ক্যাভিয়েট ফাইল করলেন ৷

প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল ৷ ছ'মাসের বেশি সময় ধরে শুনানির পর বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ প্রাক্তন বিচারপতি (অধুনা তমলুকের বিজেপি সাংসদ) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খারিজ করে ৷ এর আগে ২৯২৩ সালের ১২ মে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রাক্তন বিচারপতি প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল করে দেন ৷

চাকরি বহালের নির্দেশ দেওয়া নিয়ে বেঞ্চ জানায়, হাই কোর্টের নির্দেশে সিবিআই এই মামলার তদন্তে ২৬৪ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছে, যাঁরা বেনিয়ম করে চাকরি পেয়েছেন ৷ এরপর আরও ৯৬ জনের নাম পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ বাকিদের ক্ষেত্রে দুর্নীতির কোনও প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি ৷ ফলে শুধু সন্দেহের বশে চাকরি বাতিল করা যায় না ৷

বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ, সামগ্রিক চাকরি বাতিল করতে পর্যাপ্ত অনিয়ম সংক্রান্ত প্রমাণ প্রয়োজন । এই নিয়োগের ক্ষেত্রে বিপুল দুর্নীতির প্রমাণ সিবিআই তদন্তেও উঠে আসেনি ৷ পাশাপাশি ন'বছর পর চাকরি বাতিল হলে তাঁদের পরিবারের উপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়বে ৷ তাই চাকরি বহালের রায় দেয় ৷ বড় জয় হয় হাই কোর্টে ৷

এদিকে দুর্নীতির অভিযোগে দীর্ঘ লড়াই করার পর কেন আদালতে হার হল ? প্রশ্নের উত্তরে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের যুক্তিকে গ্রহণ করেনি আদালত ৷ কী করা যাবে? কিন্তু এখানে আদালত যুক্তি বা আইনের থেকে বেশি আবেগের দ্বারা পরিচালিত হয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে বলে আমার মনে হয় ৷ আর মামলাকারীরা রায়ের কপি দেখার পর যদি মনে করেন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবেন, তাহলে আবেদন করা হবে ৷" অন্য আরেক আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, "আদালতের কাছে আমরা পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ তুলে দেওয়ার পরও আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে একটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিই মান্যতা পেল ৷ কিন্তু আমাদের কাছে রাস্তা খোলা আছে ৷ আমরা সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি দায়ের করব ৷"


Share