Financial Stocks Lead Rally

রেপো রেট কমালো আরবিআই, ব্যাঙ্ক ও আর্থিক খাতের জাদুতে চাঙ্গা নিফটি-সেনসেক্স, বাজারের মূল চালক আর্থিক পরিষেবা!

আরবিআইয়ের রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস। বাজারে বাড়ল আস্থা, নিফটি-সেনসেক্সের উত্থান। ব্যাংক-আর্থিক শেয়ারের দাপট। ঋণের খরচ কমায় বাড়তি আশা।

রির্জাভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া
নিজস্ব সংবাদদাতা, দিল্লি
  • শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:২৮

শুক্রবার টানা দ্বিতীয় সেশনে ইকুইটি বেঞ্চমার্কগুলির লাভ অব্যাহত থাকল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৫.২৫ শতাংশে আনার সিদ্ধান্ত এবং নিরপেক্ষ নীতি বজায় রাখাই বাজারে আস্থা বাড়িয়েছে। দিনের নিচু স্তর থেকে ঘুরে এসে নিফটি ৫০ সূচক ১৫২.৭০ পয়েন্ট বেড়ে ২৬,১৮৬.৪৫–এ বন্ধ হয়। বিএসই সেনসেক্স ৪৪৭.০৫ পয়েন্ট উঠে পৌঁছয় ৮৫,৭১২.৩৭–এ। ব্যাংক এবং আর্থিক পরিষেবার শেয়ারগুলিই এই ঊর্ধ্বগতির মূল চালক। যদিও টানা ওঠানামার পর সপ্তাহ শেষে নিফটি সামান্য ০.০৮ শতাংশ নিচে নামে, সেনসেক্সও মাত্র ৫ পয়েন্ট নেমে প্রায় স্থিতিশীলই থাকে।

কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইকুইটিজের সিইও ও সহ প্রধান প্রতীক গুপ্তর ব্যাখ্যায়, রেপো রেট কমানো এবং তারল্য বাড়ানোর পদক্ষেপ সরাসরি বাজারের মনোবল বাড়ায় এবং বৃদ্ধি, তারল্য ও রুপির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ অনেকটাই কমায়। অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ডের সিআইও আশীষ গুপ্তর মতে, অতিরিক্ত তারলতা এবং জিডিপি পূর্বাভাস বাড়ানো দুই মিলিয়ে আরবিআইয়ের সিদ্ধান্ত বিশেষত আর্থিক খাতের শেয়ারগুলির জন্য ইতিবাচক সংকেত তৈরি করেছে।

বৃহত্তর বাজার অবশ্য মূল সূচকের তুলনায় দুর্বলই ছিল। বিএসই মিড–ক্যাপ সূচক ০.১৯ শতাংশ এবং স্মল–ক্যাপ সূচক ০.৩২ শতাংশ পড়ে যায়। বাজারের প্রস্থও ছিল দুর্বল—উত্থানের চেয়ে পতনই বেশি। তবে অস্থিরতা কিছুটা কমেছে, ইন্ডিয়া ভিআইএক্স ৪.৬৪ শতাংশ নেমে ১০.৩২–এ পৌঁছেছে।

সেক্টরভিত্তিক লেনদেনে মিশ্র ছবি দেখা গেছে। পিএসইউ ব্যাংক, আইটি, ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস এবং মেটালস ভালো লাভ করেছে। বিপরীতে মিডিয়া, এফএমসিজি, এনার্জি ও ফার্মা সূচক দুর্বলভাবে শেষ হয়েছে। সুদের হার কমার ফলে আর্থিক শেয়ারের চাহিদা বাড়তে দেখা যায়—নিফটি ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস ১.২ শতাংশ, ব্যাংক নিফটি ০.৮ শতাংশ এবং পিএসইউ ব্যাংক সূচক ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঋণের খরচ কমায় এবং ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় অটো সূচকও ০.৮ শতাংশ উপরে উঠে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকের প্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার হওয়ার আশায় প্রতিরক্ষা–সম্পর্কিত শেয়ারগুলিতেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা যদিও শুক্রবারও বিক্রির ধারাই বজায় রেখেছে। তাদের নেট বিক্রি ৪৩৯ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে এখন পর্যন্ত মোট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৮,৭৭০ কোটি। বৈশ্বিক বাজারে গত সপ্তাহে বেশিরভাগ সূচকই শক্তিশালীভাবে উপরে উঠলেও মার্কিন ডলারের হিসেবে ভারত ছিল অন্যতম নিম্নমানের পারফর্মার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা এবং এআই–চালিত শেয়ারগুলির র্যালির জেরে বিশ্ববাজারে বড় উত্থান দেখা গেছে।

আগামী দিনে বাজার সম্পর্কে বিশ্লেষকদের ধারণা, আরবিআই–এর সুদের হার ও তারল্য নীতি, স্থিতিশীল অভ্যন্তরীণ তহবিল প্রবাহ এবং মার্কিন ফেডের সম্ভাব্য রেট–কাট—সব মিলিয়ে বাজারে ইতিবাচক পক্ষপাত বজায় থাকবে। তবে ভারত–মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি বা আরও কিছু অর্থনৈতিক সংস্কার পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত বাজার সীমাবদ্ধ পরিসরে থাকতে পারে বলে মনে করছেন প্রতীক গুপ্ত। একই মত অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ডের আশীষ গুপ্তরও, তিনি বলেন, ডিসেম্বরে বড় আইপিও ও ইক্যুইটি ইস্যুর ভিড় বাজারে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে।


Share