Hamid murder investigation

আদ্রা রেলশহরে হামিদ আনসারি খুনে নতুন মোড় — ধনঞ্জয় চৌবে হত্যা তদন্তে বড়ো সূত্র হাতে পুলিশের

আদ্রায় যুব তৃণমূল নেতা হামিদ আনসারি হত্যা মামলায় নতুন তথ্য মিলেছে। ধনঞ্জয় চৌবে হত্যার তদন্তে ধরা পড়া পিন্টুদের জিজ্ঞাসাবাদে রেল ঠিকাদারি সিন্ডিকেট–যোগ ও শুটার নিয়োগের সূত্র পেয়েছে পুলিশ।

প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কাশীপুর
  • শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৫:৪১

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর আদ্রা রেলশহরের মিশিরডি লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে গুলিতে খুন হয়েছিলেন কাশীপুর ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি হামিদ আনসারি। রঘুনাথপুর থেকে মোটরবাইকে ফিরছিলেন তিনি। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ থাকায় সেখানে থামতেই আততায়ীরা খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে তাঁকে। দীর্ঘ তদন্তের পরও অপরাধীদের ধরতে না পেরে ঘটনাটিকে এফআরটি হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ। এখন নতুন তথ্য সামনে আসতেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। 

এত দিন পর সেই মামলায় নতুন করে দিশা দেখাচ্ছে ধনঞ্জয় চৌবে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। আদ্রা শহর তৃণমূল সভাপতি ধনঞ্জয়ের খুনে সম্প্রতি গ্রেপ্তার দীপঙ্কর ঘোষ ওরফে পিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে হামিদ হত্যার গুরুত্বপূর্ণ সূত্র পেয়েছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। ২০২৩ সালে দলীয় কার্যালয়ে গুলিতে খুন হয়েছিলেন ধনঞ্জয়। বিহারের মুজফ্ফরপুর জেলার কাটরা থানার এলাকা থেকে ধরা পড়ে পিন্টু। পরে গ্রেপ্তার হয় জুগনু সিং ওরফে ধর্মেন্দ্র।

পুলিশ সূত্রে দাবি, সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা হামিদ স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় ফুটবলার ছিলেন। পরে তৃণমূল যুব রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে আদ্রা ও আশপাশে নিজের প্রভাব বিস্তার করেন। হামিদ হত্যার নেপথ্যে ছিল রেলের ঠিকাদারি সিন্ডিকেট দখল নিয়ে সংঘর্ষ। পুলিশ জানায়, বহু বছর ধরে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত হত ঝাড়খণ্ডের একটি চক্রের হাত ধরে, যারা ঠিক করত কোন ঠিকাদারি কারা পাবে। পিন্টু ছিল সেই গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করা লোকজনের অন্যতম।

২০০৪ সালে বেনিয়াশোল এলাকায় রেলের দুই ঠিকাদার আশিস রায় ও আসলাম খুন হওয়ার পর এলাকা ছাড়ে পিন্টু। পরে ফের সক্রিয় হয় এই চক্র। তদন্তকারীদের দাবি, হামিদ খুনে জড়িত ছিল ঝাড়খণ্ডের কুখ্যাত ‘গ্যাং অফ ওয়াসিপুর’-এর একাংশ। সিন্ডিকেট দখলের চেষ্টা নিয়ে হামিদকে আগেই সতর্ক করেছিল ওই গোষ্ঠী। কিন্তু হামিদ পাল্টা যোগাযোগ করেন তাদেরই এক নেতার সঙ্গে—এর পরই খুনের ছক পাকাপাকি হয়।

জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তার দাবি, ধনঞ্জয় চৌবে হত্যাকাণ্ডে যাদের দিয়ে ‘সুপারি কিলিং’ করানো হয়েছিল, সেই একই দলের সদস্যরাই হামিদ আনসারিকে হত্যায় জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে। অভিযুক্ত ধর্মেন্দ্র ওরফে জুগনুর মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ থেকে ভাড়াটে শুটার নিয়ে আসে চক্রটি। তদন্তকারীদের দাবি, হামিদের গতিবিধি ও পরিচয় স্থানীয়ভাবেই শুটারদের সরবরাহ করা হয়েছিল। জেলার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার আত্মীয় তাদেরকে হামিদকে চিহ্নিত করে দেয়— যা পুরো খুনের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে বড় ভূমিকা নেয়।


Share