Special Intensive Revision

পশ্চিমবঙ্গে প্রকাশিত ভোটার তালিকার খসড়া, বাদ পড়া যোগ্য ব্যক্তিদের জন্য দ্বিতীয় বার শুনানির আশ্বাস কমিশনের

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ভাবে গোটা রাজ্যের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, খসড়া তালিকায় নাম থাকার কথা থাকলেও যদি কারও নাম না থাকে, তবে প্রথমে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রয়োজনে দ্বিতীয় পর্যায়ে সরাসরি সিইও দফতরেও অভিযোগ করা যাবে।

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন আধিকারীক মনোজ আগওয়াল
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৫৯

পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া তালিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার সকাল থেকেই নির্দিষ্ট অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে এপিক নম্বর দিয়ে ভোটারেরা খসড়া তালিকায় নিজেদের নাম রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে পারেন। সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ভাবে গোটা রাজ্যের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল।

সাংবাদিক বৈঠকে সিইও জানান, খসড়া তালিকায় নাম থাকার কথা থাকলেও যদি কারও নাম না থাকে, তবে প্রথমে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। প্রয়োজনে দ্বিতীয় পর্যায়ে সরাসরি সিইও দফতরেও অভিযোগ করা যাবে। তাঁর আশ্বাস, যাঁদের নাম বাদ যাবে, তাঁদের কারণ জানানো হবে। যোগ্য সকল ভোটারের নামই তালিকায় থাকবে। যুক্তিসঙ্গত কারণে প্রথমবার শুনানিতে উপস্থিত থাকতে না পারলে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। শুনানির নির্দিষ্ট পদ্ধতি পরে জানানো হবে এবং ‘নো-ম্যাপিং’ তালিকাভুক্ত সকলকেই শুনানিতে ডাকা হবে।

বুধবার থেকেই শুনানির নোটিস পাঠানো শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সিইও। প্রকৃত ভোটারদের নাম নিশ্চিত করতে ২,৮০০ জন অতিরিক্ত ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। হুগলিতে এক কাউন্সিলরের নাম বাদ যাওয়ার ঘটনায় জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ইচ্ছাকৃত ত্রুটি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিএলও-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদ্য প্রকাশিত খসড়া তালিকায় মোট ভোটারের সংখ্যা সাত কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯। মৃত, অন্যত্র স্থানান্তরিত, নিখোঁজ, ভুয়ো ভোটার এবং যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেননি এদের বাদ দিয়েই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, যাঁরা এনিউমারেশন ফর্মে কেবল সই করে জমা দিয়েছেন, তাঁদের নামও খসড়া তালিকায় রয়েছে। সব মিলিয়ে ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৯ জনের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।

কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, বাদ পড়া ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮ জনের মধ্যে মৃত ভোটার ২৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৮৫২ জন, নিখোঁজ ১২ লক্ষ ২০ হাজার ৩৯ জন, স্থানান্তরিত ১৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৬ জন এবং একাধিক জায়গায় নাম থাকা ভুয়ো ভোটার এক লক্ষ ৩৮ হাজার ৩২৮ জন। পাশাপাশি ৫৭ হাজার ৬০৪ জন এনুমারেশন ফর্ম পূরণ না করায় সরাসরি বাদ গিয়েছেন।

ভোটারদের তিনটি ভাগে শ্রেণিবদ্ধ করেছে কমিশন। সেগুলি হল নিজস্ব ম্যাপিং, প্রোজেনি ম্যাপিং ও নন-ম্যাপিং। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁরা নিজস্ব ম্যাপিংয়ের আওতায়, সেই সংখ্যাটি দুই কোটি ৯৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৮৮। যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না থাকলেও বাবা-মা বা আত্মীয়ের নাম রয়েছে, তাঁরা প্রোজেনি ম্যাপিং তালিকায়, সেই সংখ্যা তিন কোটি ৮৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৩৯। আর যাঁদের নিজের বা আত্মীয়ের নাম কোনোটিই ২০০২ সালের তালিকায় নেই, এমন প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটার নন-ম্যাপিং তালিকাভুক্ত; তাঁদের সকলকেই শুনানিতে ডাকা হবে।

এ ছাড়া দেড় কোটিরও বেশি ভোটারের এনিউমারেশন ফর্মে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। বয়সের অস্বাভাবিক ব্যবধান, একাধিক ভোটারের একই বাবার নামসহ বিভিন্ন সন্দেহজনক তথ্যের কারণে এক কোটি ৬৭ লক্ষ ৪৫ হাজার ৯১১ জন ভোটারের তথ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুনরায় যাচাই করবেন বিএলও-রা। যাচাই সন্তোষজনক না হলে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানিতে ডাকা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।


Share