Cross-Border Sex Racket

ভরুচে পর্দা ফাঁস অবৈধ দেহব্যবসার আন্তর্জাতিক চক্রের! বাংলাদেশি অভিবাসী নারীদের ফাঁদে ফেলে স্পা-তে যৌনপেশায় বাধ্য, উদ্ধার ১৪

ভরুচে অবৈধ অভিবাসীদের জড়িত সংঘবদ্ধ দেহব্যবসার চক্রের হদিস। ১৪ জন নারী উদ্ধার, বাংলাদেশি এজেন্ট-সহ চারজন গ্রেপ্তার। স্পা ও বাড়ি থেকেই চলত বেআইনি কারবার।

প্রতীকী চিত্র
নিজস্ব সংবাদদাতা, ভরুচ
  • শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:২১

ভরুচ জেলা পুলিশ শনিবার জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের জড়িত একটি সংঘবদ্ধ দেহব্যবসার চক্রের পর্দা ফাঁস করা হয়েছে। যৌথ অভিযানে ১২ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও পশ্চিমবঙ্গের দুই নারী-সহ মোট ১৪ জন নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানকারী এজেন্টদের নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে চারজন পুরুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের খোঁজে ভরুচ জেলা পুলিশের লোকাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ (এলসিবি) এবং স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ (এসওজি) যৌথভাবে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় এলসিবি-র পুলিশ পরিদর্শক এম পি ভালা গোপন সূত্রে ফারুক শেখ নামে এক বাংলাদেশি এজেন্টের খোঁজ পান। অভিযোগ, বিউটি পার্লার বা গৃহকর্মীর চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ বাংলাদেশি নারীদের ভরুচ জেলায় বসতি স্থাপনে সহায়তা করত সে।

তবে পরে ওই নারীদের দেহব্যবসায় ঠেলে দেওয়া হতো এবং জাম্বুসারে শেখের বাড়িতে আটকে রাখা হতো, সেখান থেকেই পুরো চক্রটি পরিচালিত হতো বলে পুলিশের দাবি। উদ্ধার হওয়া নারীদের ভরুচ ও আঙ্কেলেশ্বরের বিভিন্ন স্পা এবং গেস্ট হাউসে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, ভরুচে নাজিম খান পরিচালিত ‘মুসকান স্পা’-তে তিনজন, ভরুচে রইস শেখ পরিচালিত একটি গেস্ট হাউসে তিনজন এবং আঙ্কেলেশ্বরে সুজিতকুমার ঝা পরিচালিত একটি স্পা-তে চারজন নারীকে পাঠানো হয়েছিল। যৌথ পুলিশ দল তিনটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ জন নারীকে উদ্ধার করে, পাশাপাশি শেখের বাড়ি থেকে আরও চারজনকে উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক শেখ স্বীকার করেছে যে সে নিজেও অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসে এবং পশ্চিমবঙ্গে জাল পরিচয়পত্র ও জন্ম সনদ সংগ্রহ করে গুজরাটে বসবাস করছিল। গত এক দশক ধরে সে বাংলাদেশি এজেন্টদের নেটওয়ার্ক ও আত্মীয়দের সাহায্যে বাংলাদেশি নারীদের ভারতে নিয়ে এসে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দেহব্যবসায় যুক্ত করত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের দাবি, শেখ এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন বাংলাদেশি নারীকে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ১২ জন নারী ছাড়াও, এজেন্টদের মাধ্যমে অন্যান্য নারীদের গোয়া, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের মতো রাজ্যে পাঠানো হয়েছে বলেও সে স্বীকার করেছে।

অভিযান চলাকালীন পুলিশ মোবাইল ফোন, ৬৪ হাজার টাকা নগদ এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিচয়পত্র উদ্ধার করেছে। ফারুক শেখ, নাজিম খান, রইস শেখ ও সুজিতকুমার ঝা—এই চারজনের বিরুদ্ধে ১৯৫৬ সালের অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইন এবং ২০২৩ সালের ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


Share