SIR Will Be Announced in October

পুজোর পরেই শুরু হবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে ভোটার তালিকা পরিমার্জন, সময় চুড়ান্ত করে ফেলল জাতীয় নির্বাচন কমিশন

এসআইআর নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে একটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। সেখানে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই বৈঠকের শেষে দেশব্যাপী কবে এসআইআর হচ্ছে, তা ঠিক হয়েছে।

আগামী মাসেই ঘোষণা হবে এসআইআর।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৩০

বিহারের পর গোটা দেশে হবে ভোটার তালিকার নিবিড় ও বিশেষ সংশোধন (এসআইআর)। পশ্চিমবঙ্গে কবে হবে পরিমার্জনের প্রক্রিয়া, তা নিয়ে গুঞ্জন ছিলই। এ বার সেই গুঞ্জনে সিলমোহর পড়ল। আগামী মাস, অক্টোবরে পূজো শেষ হলেই শুরু হবে এসআইআর। এ ছাড়াও সেপ্টেম্বর মাসেই তার প্রস্তুতি চুড়ান্ত করে ফেলার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

বুধবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে এই মর্মে একটি কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সেই কনফারেন্সে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সিইওরা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশন সুত্রের খবর, এসআইআর চালু হওয়ার আগে চলতি মাসের ২৬ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে প্রস্তুতি চুড়ান্ত করে ফেলতেই হবে। তার কারণ অক্টোবর মাসে যে কোনও দিন এসআইআরের দিন ঘোষণা হয়ে যাবে। আগামী ২ অক্টোবর শেষ হচ্ছে দূর্গা পুজো। তারপরে রয়েছে লক্ষ্মীপুজো এবং কালীপুজো। মনে করা হচ্ছে, তার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে এসআইআরের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।

বিহারের পরে বাকি রাজ্যে কবে এসআইআর হবে, তা নিয়ে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল কমিশন। তবে দিনক্ষণ স্পষ্ট ছিল না। এ বার তা স্পষ্ট করে সিইওদের বলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী বছর রাজ‍্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগেই কমিশনের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

শেষ বার ভোটার তালিকায় সংশোধন হয়েছিল ২০০২ সালে। এসআইআর হওয়ার পরে মোট ভোটারের সংখ্যা কত, তা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যেই আপলোড করা হয়েছে। প্রায় দু’দশক পরে ফের সেই প্রক্রিয়ার ত্বরান্বিত করতে উদ্যোগী হল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।

দেশব্যাপী কীভাবে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় পরিমার্জন কারা যায়, সেই বিষয়ে বুধবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে একটি বিশেষ কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই কনফারেন্সে সব রাজ‍্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সিইওদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কমিশন সুত্রের খবর, বিহারে এতো অল্প সময়ের কীভাবে তা সম্ভব করা গিয়েছে, তা নিয়ে সেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে সবার সামনে এনেছেন।

সম্প্রতি বিহারে এসআইআরের কাজের পরে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছিল। এসআইআর চলাকালীন খসড়া তালিকায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ যায়। মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। কমিশন জানায়, এসআইআরে প্রথমে আধার কার্ডকে ব‍্যক্তি পরিচয়ে গণ‍্য করা হচ্ছিল না। এই বিষয়ে তৃণমূল-সহ বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রশ্ন তুলেছিল।

আধার কার্ডকে কেন প্রমাণ‍্য নথি হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে বারবার নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ৫০ বছর আগে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের জন্মের শংসাপত্র পাওয়া যাবে কী করে? এসআইআরের নামে এনআরসি করতে চাইছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

যদিও আধার কার্ডকে ব‍্যক্তি পরিচয়ের প্রমাণ‍্য নথি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে জানায় দেশের শীর্ষ আদালত। তবে সেটা আপাতত বিহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানায়, আধার কার্ড নাগরিকত্বের পরিচয় নয়। কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে তা ব‍্যবহার করা যেতেও পারে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আধার কার্ডও এখন একটা পরিচয়পত্র। এসআইআর যে দু-তিন মাসের মধ্যে নয়, তা তিন-চার বছর লাগে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তিনি রাজ‍্যবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “যাঁদের আধার কার্ড নেই, তাঁরা করিয়ে নেবেন।”

যদিও বিজেপি এসআইআরের দাবিতে সরব হয়েছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, রাজ‍্যে এসআইআর হলে তৃণমূল ভোটার অর্ধেক হয়ে যাবে। বিরোধী দলনেতা বলেছেন, “নো এসআইআর, নো ইলেকশন।”


Share