Special Intensive Rivision

ভোট প্রস্তুতিতে সতর্কতা, ২৫ এজেন্সির সঙ্গে বৈঠকে কমিশনের, কড়া বার্তা জেলা কর্তাদের

নির্বাচন প্রস্তুতিতে কমিশনের কড়া বার্তা, এনুমারেশন ফর্ম ডিজিটাইজ না হওয়ায় অসন্তোষ। নতুন বুথ চিহ্নিতকরণে জেলা আধিকারিকদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ কমিশন। ১৬ ডিসেম্বর খসড়া তালিকা পূর্বের বুথেই। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন বুথের প্রস্তাব চেয়েছে কমিশন।

ভোট প্রস্তুতিতে ২৫ এজেন্সির সঙ্গে বৈঠকে কমিশনের
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০২:৪৫

আজ, বৃহস্পতিবার এনুমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ দিনে পশ্চিমবঙ্গে ফর্ম বিতরণের প্রাথমিক পর্যায় প্রায় ৯৯ শতাংশ সম্পন্ন হলেও বহু জায়গায় এখনও জমা পড়া ফর্ম ডিজিটাইজ না হওয়ার সমস্যা রয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভোট প্রস্তুতি পর্যালোচনার জন্য ২৫টি এজেন্সির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে নির্বাচন কমিশন। সকাল সাড়ে এগারোটায় বৈঠক শুরু হওয়ার কথা থাকলেও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার উপস্থিতি বেলা একটার পরও দেখা যায়নি। তবে রাজ্য পুলিশের নোডাল অফিসার আনন্দ কুমার বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।

এদিনের বৈঠকে ইতিমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন সিআইএসএফ-এর এয়ারপোর্ট ডিআইজি অজয় কুমার, অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অরিন্দম নিয়োগী, পূর্ব রেলের আরপিএফ-এর চিফ সিকিউরিটি কমিশনার ডিআইজি রফিক আহমেদ আনসারি, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি ভূপেন্দ্র যাদব এবং রাজ্য পরিবহন দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। পাশাপাশি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ সিকিউরিটি কমিশনার তথা আরপিএফ আইজি অমিয়নন্দন সিনহা।

এরই মধ্যে কমিশন জানিয়েছে যে তারা আগামী ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। কিন্তু এর আগে বিশেষ নিবিড় সংশোধন চলাকালীন নতুন বুথ চিহ্নিতকরণে জেলা নির্বাচন আধিকারিকদের গড়িমসিতে কমিশন ব্যাপক অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে। কমিশনের অভিযোগ, আগেই জানানো হয়েছিল— কোনও বুথে ১২০০-র বেশি ভোটার থাকলে নতুন বুথ তৈরি করা দরকার। এমনকি বহুতল, হাউজিং সোসাইটি, গেটেড কমিউনিটি, আরডব্লুএ কলোনি ও স্লাম এলাকায় উপযুক্ত কমন এরিয়া বা গ্রাউন্ড ফ্লোরে রুম পাওয়া গেলে সেখানে বুথ বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের কোনও জেলা সেই নির্দেশ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেনি বলে কমিশন স্পষ্ট অভিযোগ তুলেছে।

এ নিয়ে কমিশন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে কড়া চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে যে কোনও জেলার পক্ষ থেকেই নতুন ভোটকেন্দ্রের প্রস্তাব পাঠানো হয়নি, যা তারা অত্যন্ত গুরুতর ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ২৫ নম্বর ধারায় নির্দিষ্ট স্ট্যাটুটরি দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও জেলা নির্বাচন আধিকারিকরা তা মানতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও কমিশনের মন্তব্য।

ফলে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নতুন বুথ চিহ্নিত না হওয়ায় ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিতব্য খসড়া ভোটার তালিকা আগের বুথ অনুযায়ীই প্রকাশ করা হবে। এসআইআর প্রক্রিয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকায় এখন আর নতুন কোনও পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। তবে খসড়া প্রকাশের পরে বহুতল, হাউজিং সোসাইটি, গেটেড কমিউনিটি ও স্লাম এলাকায় যেখানে ২৫০টি বাড়ি বা অন্তত ৫০০ ভোটারের উপস্থিতি রয়েছে, সেখানে গ্রাউন্ড ফ্লোরে বুথ বসানোর উপযুক্ততা পুনরায় সমীক্ষা করতে হবে বলে নতুন নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। স্লাম এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বুথ তৈরির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে হবে।

সবশেষে কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের সব জেলা নির্বাচন আধিকারিককে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নতুন বুথ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব মুখ্য নির্বাচন দফতরের মাধ্যমে কমিশনে পাঠাতে হবে। এরপর কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের আগে প্রয়োজনীয় পুনর্বিন্যাস সম্পন্ন করা হবে।


Share