SSC Scam

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই কাজ করা হবে, বিবৃতি দিয়ে জানাল স্কুল সার্ভিস কমিশন।

চাকরিহারাদের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল এসএসসির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁদের দাবি, বৈঠকে এসএসসি-র তরফে বলা হয়েছে, প্রথম থেকে তৃতীয় কাউন্সেলিং পর্যন্ত যাঁরা রয়েছেন তাঁরাই ‘বৈধ’। চতুর্থ কাউন্সেলিং থেকে বাকিরা ‘অবৈধ’ ভাবে নিয়োগ পেয়েছেন!

এসএসসি ভবনের বাইরে চলছে বিক্ষোভ।
এখন কলকাতা ডেস্ক, কলকাতা
-নিজস্ব চিত্র।
  • শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০০

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু তা করা হল না। রাত ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ এসএসসি বিবৃতি দিয়ে জানাল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের নড়চড় হবে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মাফিক যাঁরা বেতন পাচ্ছেন, কেবল তাঁরাই বেতন পাবেন এবং চাকরি করবেন। এর পর বিক্ষোভরত চাকরিহারাদের তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের।? 

সোমবার রাত ১২টার পরে এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানিয়েছেন বলেন, ‘‘২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে যে, এসএসসি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে। এবং বিভাগ কর্তৃক জানানো হচ্ছে, যে শিক্ষকেরা চাকরি করেছেন, তাঁদের বেতন বর্তমান ব্যবস্থা অনুসারেই বিতরণ করা হবে।’’ অন্য দিকে, বিক্ষোভকারী চাকরিহারা শিক্ষকেরা জানিয়ে দেন, যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা না পেলে তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। চাকরিহারাদের অভিযোগ, ‘‘কথা দিয়েও কথা রাখেনি না এসএসসি। এই ভাবেই অযোগ্যদের বাঁচানোর প্রয়াস চলছে।’’ আন্দোলনকারীরা এসএসসি-র নির্দেশে নতুনত্ব কিছু দেখতে পাননি । তা হলে কেন এত ক্ষণ সময় নেওয়া হল প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারা।? 

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল রায়ের পর থেকে চাকরিহারারা দাবি করছেন, যোগ্যদের তালিকাটা প্রকাশ করা হোক। ওই দাবি নিয়ে গত ১১ এপ্রিল বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করেন চাকরিহারাদের প্রতিনিধিরা। সেই বৈঠকে ছিলেন এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারও। সে দিন বৈঠক শেষে চাকরিহারারা জানান, ২১ এপ্রিলের মধ্যে ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশের বিষয়ে তাঁরা আশ্বাস পেয়েছেন।? 

সে দিন শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইতিমধ্যে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা তৈরি করতে শুরু করেছে এসএসসি। আইনি পরামর্শ নিয়েই তাঁরা ২১ এপ্রিলের মধ্যেই ওই তালিকা প্রকাশ্যে আনার চেষ্টা করবেন। মন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও ২১ এপ্রিল সেই তালিকা আসেনি। চাকরিহারাদের অভিযোগ, তাঁদের প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বোকা বানিয়ে রাখার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার থেকে এসএসসি। কিন্তু এ বার আর ‘ললিপপ’ নিয়ে বাড়ি ফিরবেন না তাঁরা। তাই রাতভর এসএসসি দফতর ঘেরাও করছেন। তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত ওই জায়গা থেকে সরবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।? 

এ দিন রাতে চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘ওঁরা এসি ঘরে বসে থাকুন। ওরা স্যালারি পাচ্ছেন। আর আমাদের বলা হচ্ছে, আপাতত স্বেচ্ছাসেবক হয়ে কাজ করতে। রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীকে বলব, সব ছেড়ে এসএসসি অফিসের সামনে আসুন। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল ফেরাতে একজোট হোন।’’ আর এক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, ‘‘আমরা বলে এসেছি, আপনি (এসএসসি-র চেয়ারম্যান) কথা বলুন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। যদি এই ভাবে আমাদের চাকরি কেড়ে নেন, ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ইয়ার্কি পেয়েছে! যে রকম নাচাবে সে রকম নাচব? গুলি করে মেরে দিন।’’? 

বিজেপির অমিত মালব্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাঁর জন্যই এই হাল। লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা নেই আন্দোলনকারীদের সম্মুখীন হওয়ার।”? 


Share