High Court

যুবভারতীকাণ্ডে রাজ্য সরকারের তৈরি করা তদন্ত কমিটিতে ভরসা নেই, বিতর্কের মধ্যেই হাই কোর্টে দায়ের তিনটি জনস্বার্থ মামলা

যুবভারতীকাণ্ডে রাজ্য সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা। পৃথক ও আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবি, টিকিটের টাকা ফেরত ও কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত চাওয়া হয়েছে।

যুবভারতীকাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্ট জোড়া জনস্বার্থ মামলা
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা
  • শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:৫২

যুবভারতীকান্ডের পরে রাজ‍্য সরকারের তৈরি করা তদন্ত কমিটিতে ভরসা নেই। এ বার তার বৈধতাকে চ‍্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হল তিনটি জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারীদের দাবি, রাজ্য সরকারের গঠিত এই কমিটির তদন্ত চালানোর ক্ষমতা নেই। তাই সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য পৃথক কমিটি গঠন করা প্রয়োজন হোক। আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবিও জানানো হয়েছে।

চলতি সপ্তাহেই এই দুই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, যুবভারতীর ঘটনার তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। এই কমিটির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ও পৃথক ভাবে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উভয়ের বক্তব্য, রাজ্যের গঠিত কমিটি নিরপেক্ষ তদন্তে সক্ষম নয়। তাই আদালতের পক্ষ থেকে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি তোলা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী আদালতের নজরদারিতে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।

এ ছাড়াও, আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন মৈনাক ঘোষাল। তিনি আদালতের নজরদারিতে তদন্তের পাশাপাশি দর্শকদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি ও সিবিআই তদন্তের আবেদনও করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্টেডিয়ামের ক্ষয়ক্ষতির অর্থ আয়োজক সংস্থাকে বহন করার দাবি জানানো হয়েছে।

গত শনিবার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ফুটবলের রাজপুত্র লিওনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে অশান্তি ছড়ায়। মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে টিকিট কেটে প্রিয় তারকে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সমর্থকেরা। কারণ, নির্ধারিত সময়ের আগেই মেসি মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। যেটুকু সময় তিনি মাঠে ছিলেন, সেই সময়ও সমর্থকেরা ফুটবলের রাজপুত্রের দেখা পাননি। কারণ তাঁকে ঘিরে ছিল তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী এবং তাঁদের সাগরেদরা। 

এর পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা স্টেডিয়াম। বাকেট চেয়ার ভাঙচুর করে মাঠে ছোঁড়া হয়। স্টিলের ব‍্যারিকেড ভেঙে মাঠে নেমে পড়েন সমর্থকেরা। চলে তান্ডব। এমনকি কয়েক জন পুলিশকর্মীকে ধাক্কাধাক্কি করেন। অগ্নিসংযোগ করা হয় সোফায়। তার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে পৌঁছেছে। তা পরীক্ষা করে দেখেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

রবিবার সকালে মমতার গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা যুবভারতী স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যান। তাঁরা গ্যালারি ও মাঠের একাধিক অংশ খতিয়ে দেখেন এবং ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়। স্টেডিয়ামে দীর্ঘ বৈঠকের পর বেরিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার রায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেও তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।


Share